কলকাতা : কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে ঢোকার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুন হয়েছেন সুবীর চাকি। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এ রকমই তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। জোড়া খুনের তদন্ত হাতে নিয়েছে লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগ। রবিবার নিউ টাউনের বাড়ি থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ রওনা দেন সুবীর চাকি। এর কিছু পরেই তিনি এবং গাড়ির চালক রবীন মণ্ডল ৭৮/ এ কাঁকুলিয়া রোডের ঠিকানায় পৌঁছন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুবীর চাকি এবং রবীন মণ্ডল খুন হন।
কীভাবে খুন তারই জট ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। দু’জনের শরীরের এলোপাথাড়ি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এক বা একাধিক আততায়ী দুই টার্গেটকে ধারাল কোনও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। সুবীর চাকির ঘাড়ে এবং পায়ে গভীর ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের ঘাড়, পা এবং পিঠে আঘাত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই দু’জনের মৃত্যু হয়। গোয়েন্দাদের অনুমান এরপর কাঁকুলিয়া রোডের ওই বাড়ি থেকে এক বা একাধিক আততায়ী কিছু জিনিস লুঠপাট করে। হাতিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ গোয়েন্দারা। গোয়েন্দারা খুনের সঙ্গে লুঠের মামলায় দায়ের করেছে।
সম্পত্তি নিয়ে আর্থিক গোলমালের জেরেই কি কাঁকুলিয়া রোডের জোড়া খুন? কেননা মালিক সুবীর চাকি ৭৮/ এ কাঁকুলিয়া রোডের ওই বাড়িটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। একাধিক ক্রেতার সঙ্গেই তাঁর কথাবার্তা চলছিল। কোটি টাকার উপরে দাম রেখেছিলেন খুন হয়ে যাওয়া সুবীর চাকি। রবিবারও বাড়ি বিক্রির কাজেই কাঁকুলিয়া রোডের ওই বাড়িতে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন গাড়ির চালক রবীন মণ্ডল।
আরও পড়ুন – কাঁকুলিয়ায় রহস্যময় জোড়া-খুন, কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে টানাপোড়েন
কাঁকুলিয়া রোডের ওই বাড়ির এক তলায় একটি অফিসও আছে। কনসালটেন্ট অফিস। সেখানকার এক কর্মী সমর চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেছে কলকাতা টিভি ডিজিটাল টিম। তাঁর দাবি, অফিসের দিকের অংশটির সঙ্গে মূল বাড়ির কোনও যোগাযোগ নেই। অর্থাৎ অফিসের দরজা একেবারে আলাদা। তবে ইদানীং বেশ কিছু লোকজন যে বাড়িটি দেখতে আসছিল তা সমর চক্রবর্তীর কথায় পরিস্কার। রবিবার অফিস বন্ধ ছিল, তাই কারা কারা এসেছিলেন, কখন এসেছিলেন তা এক তলার অফিসের কেউ বলতে পারেননি। এ ব্য়াপারে নিশ্চিত হতে রবিবার রাতেই এলাকার সিসিটিভি সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন – জোড়া খুন কাণ্ডে নয়া মোড়, মৃত দুই ব্যক্তির মোবাইল ফোন খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ
রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নিউ টাউনের বাড়ি থেকে কাঁকুলিয়া রোড রওনা দেন সুবীর চাকি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর গাড়ির চালক রবীন। বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী বারবার ফোন করেন। ফোন বেজে বেজে এক সময় বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই বাড়ির লোকজন কাঁকুলিয়া রোডেরই এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি গড়িয়াহাট পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে যান। পুলিশ মৃত অবস্থায় সুবীর চাকি এবং তাঁর চালক রবীন মণ্ডলের দেহ উদ্ধার করে।