মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) বিভিন্ন হাসপাতালে (Hospital) চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল (Doctors Leave Canceled)। পুরসভা তৈরি শুরু করল আশ্রয়স্থল। বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রভাব পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। ওড়িশার সংলগ্ন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর সামনে। এই জেলার বহু মানুষ হতাহতের তালিকায় রয়েছেন। যদিও জেলাশাসক পুলিশ সুপার সকলে জানিয়েছেন এখনও নিশ্চিত তালিকা পাওয়া যায়নি।
বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বালাসোরের কাছে উল্টে গেল ট্রেনটি। তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের কামরা আর রেললাইনের স্লিপারগুলো দলা পাকিয়ে পড়ে রয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ছিন্নভিন্ন কামরাগুলি ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। রেললাইনের ধারে ট্রেনের কামরা কাত হয়ে পড়ে রয়েছে। হাত-পা ছিটকে পড়েছে চারিদিকে, দলা পাকানো দেহের সারি। আর চতুর্দিকে দলা পাকিয়ে যাওয়া সারি সারি লাশ। রক্তাক্ত চতুর্দিক। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬০। আহত প্রায় ৬৫০ জনের মতো। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে। আহত প্রায় হাজারের কাছাকাছি মানুষ।
দুর্ঘটনার পর নিকটবর্তী বালাসোর হাসপাতালে প্রায় শতাধিক যাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালজুড়ে কান্নার রোল। ভিড় বাড়ছে আত্মীয়-স্বজনদের। তার মধ্যেই এখনও পর্যন্ত ৪০ জন কে শনিবারই সকালে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে এর জন্য রওনা করা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। সূত্রের খবর মোট ৩৪৫ জন কে নিয়ে যাওয়া হবে মেদিনীপুরে। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার রাত থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত কুমার রাউত জানান- হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরি করে আমরা রাত থেকেই প্রস্তুত রয়েছি। ব্লাড ব্যাংকে পর্যাপ্ত রক্ত মজুত এর ব্যবস্থা করা হয়েছি। ইতিমধ্যেই পাঁচজন ভর্তি। মেদিনীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই প্রান্তে দুটি বড় টেন্ট তৈরি করা শুরু হয়েছে। যেখানে আহত ও নিহতদের পরিবারের লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া হবে। রাতি কাটানোর জন্য আশ্রয়স্থল হিসেবে পাশেই থাকা পুরসভার রাজীবগান্ধী পুরনিলয়ম কেও তৈরি করা হয়েছে। একাধিক আয়োজন শুরু হয়েছে মেদিনীপুর পুরসভার পক্ষ থেকে বলেও জানিয়েছেন পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান। সেই সঙ্গে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীরা রক্তদান শিবির শুরু করেছেন রক্ত সংগ্রহের উদ্দেশ্যে।
বালেশ্বরে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রেন দুর্ঘটনার পর সোরো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এ রাজ্যের বহু মানুষ। আহতদের সঙ্গে দেখা করার পর, দুর্ঘটনাস্থলেও যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। পরিদর্শন সেরে আজই হেলিকপ্টারে কলকাতায় ফিরবেন তিনি। এই ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার সমস্ত ট্রেন বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ওড়িশাগামী ট্রেনও বাতিল। এর ফলে যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কাও রয়েছে।