কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যলয়ের (Jadavpur University) মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে তৃতীয় চিঠি পাঠাল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। এর আগেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফে দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, আগের পাঠানো চিঠির যে জবাব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট নয় কমিশন। আর সেই কারণেই নতুন করে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিশু সুরক্ষা কমিশনই (Commission Protection Of Child Rights) নয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনও দুটি চিঠি পাঠিয়েছিল। কর্তৃপক্ষের জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তৃতীয় চিঠি পাঠানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
ছাত্রমৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির (Internal Committee) রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার রাতে আভ্যন্তরীন কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়ারা মৃত্যুর নেপথ্যে র্যাগিংয়ের রয়েছে বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি। এর আগে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তদন্তকারী দলও জানিয়েছিল, যাদবপুরে ওই রাতে র্যাগিং হয়েছিল তার প্রামণ পেয়েছে। এদিন কমিশনের তরফে ফের তৃতীয় চিঠি পাঠানো হল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে যে তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, হস্টেলের আবাসিকদের সংখ্যা কত। এছাড়াও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি যে তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে চেয়ে পাঠানো হয়েছিল, তা সঠিক ভাবে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রেকর্ড যে ভাবে বজায় রাখা উচিত, সেই ভাবে রাখা হয়নি বলেও জানিয়েছে কমিশন। ইউজিসির যে সব নিয়ম রয়েছে, তা-ও সঠিক ভাবে মানা হয়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিশন।
ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তাও তৃতীয় নোটিসে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শিশু সুরক্ষা কমিশনের চিঠি পাঠানোর এক্তিয়ার রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: শিক্ষিকার ভূমিকায় নিন্দার ঝড়
কমিশনের চেয়ারপার্সেন সুদেষ্ণা রায়ের জানান, মৃত ছাত্রের ১৮ বছর বয়স হয়নি, তাই ওই পড়ুয়া শিশু সুরক্ষা কমিশনের এক্তিয়ারে পড়ে। তিনি আরও বলেন, আমরা দ্বিতীয় যে চিঠি পাঠিয়েছিলাম তার জবাব সন্তোষজনক নয় (Ju Student Death)। তাই আমরা আবার চিঠি পাঠিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল যে তাদের কাছে রেকর্ড বজায় আছে। কিন্তু তারা হস্টেলে আবাসিকদের সংখ্যা, র্যাগিং বিরোধী কমিটি সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি (Ju Student Death)। এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন, আমি এখনও কোনও রিপোর্ট দেখিনি। দেখে জানাব।
অন্যদিকে ছাত্র মৃত্যুর (Ju Student Death) পর ক্যাম্পাসে মেলে প্রচুর মদের বোতল। পাশাপাশি পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে যে হস্টেলের টবে চলতো গাঁজা চাষ। শনিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস পরিষ্কার করতে আসেন সাফাই কর্মীরা। এবং সেখানকার ওপেন থিয়েটার থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর খালি মোদের বোতল এবং নেশা সামগ্রী। সাফাইকর্মীরাই বলছেন, এক মাস আগেও যখন তাঁরা ওপেন এয়ার থিয়েটার সাফাই করতে এসেছিলেন, তখনও এভাবে গাদা গাদা মদের বোতল কুড়িয়েছিলেন তাঁরা।