ওয়াশিংটন: ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (US Presidential Election 2024) লড়তে পারবেন না আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। মঙ্গলবার কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট (Colorado Supreme Court) জানিয়েছে, ট্রাম্প নির্বাচনে লড়ার অযোগ্য। ২০২১ সালে ক্যাপিটলে (Capitol) তাঁর সমর্থকরা যে হামলা করেছিল, তাতে ট্রাম্পের উসকানির অভিযোগের জেরেই এই রায় দিয়েছে আদালত।
মার্কিন ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রার্থীকে আদালত অযোগ্য বলে ঘোষণা করল। ট্রাম্পকে নির্বাচনে লড়ার অযোগ্য হিসেবে ঘোষণার ক্ষেত্রে রায়ের পক্ষে ভোট ছিল ৪–৩। মার্কিন সংবিধানে রয়েছে, যাঁরা বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের কোনও পদে রাখা যাবে না। যদিও এই বিধান খুব কমই ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: রামমন্দিরে আদবানি, জোশিকে আমন্ত্রণ সঙ্ঘের
কলোরাডো সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে হিংসায় উসকানিমূলক ভূমিকা ছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ক্যাপিটল হামলায় জড়িত থাকার কারণেই রিপাবলিকান প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পদপ্রার্থী হিসাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হচ্ছে।
তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র কলোরাডোর রিপাবলিকান প্রাইমারি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যা আগামী ৫ মার্চ হতে চলেছে। এদিকে, ট্রাম্পের প্রচারের দায়িত্বে থাকা সংস্থার তরফে এই রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট ও অগণতান্ত্রিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আদালত যে রুল জারি করেছে তার মর্মার্থ হলো ট্রাম্প ওই রাজ্যের জন্য আর প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নন। আদালতে সাতজন বিচারকের মধ্যে চারজন এই রায়ের পক্ষে মত দিয়েছেন, তিনজন বিপক্ষে।
কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণার জন্য মার্কিন সংবিধানের বিধান ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করা হল।
ট্রাম্পের প্রচার বিভাগের মুখপাত্র স্টিভেন চিয়াং আদালতের এই রায়কে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে বিচারকদের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, সবাই ডেমোক্র্যাট গভর্নরের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত।
রাজ্যের ডেমোক্র্যাট নেতারা মস্তিষ্ক বিকৃতিতে ভুগতে শুরু করেছেন, কারণ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্প সমীক্ষাগুলোতে এগিয়ে আছেন, বলেন চিয়াং। বাইডেনের প্রেসিডেন্সিতে আস্থা হারিয়ে এখন আগামী নভেম্বরের পরাজয় ঠেকাতে ভোটারদের থামাতে চাইছে, তিনি বলেন।
ট্রাম্পের আইনজীবী দল শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে আপিল করবেন। তবে বিষয়টি যারা আদালতে এনেছিল সেই সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস ইন ওয়াশিংটন আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। এটি শুধু ঐতিহাসিক ও যৌক্তিকই নয়, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষা দিতেও এটি দরকার ছিল বলে এক বিবৃতিতে বলেন গ্রুপটির প্রেসিডেন্ট নোয়াহ বুকবিন্ডার।
উল্লেখ্য,আমেরিকার সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল দেশটির গৃহযুদ্ধের পর। মূলত তখন আগের সরকারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঠেকাতে এই সংশোধনীটি নেওয়া হয়।
ট্রাম্প গত নির্বাচনে কলোরাডো রাজ্যে বড় ব্যবধান হেরেছিলেন। তবে আর কোনও রাজ্য যদি কলোরাডোর মতো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে ট্রাম্পকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
অন্য খবর দেখুন