কলকাতা: শনিবার সকালে কোলাঘাটে (Kolaghat) বিজেপির পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তিনি পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের হিংসার কথা তুলে ধরে আক্রমণ শানান। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই মোদিকে পাল্টা আক্রমণে নামলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এক অডিও বার্তায় মমতা বিজেপি জমানার দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন। মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার মুখে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ মানায় না। আপনাকে ঘিরেই তো অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পিএম কেয়ার ফান্ড থেকে শুরু করে রাফাল চুক্তি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি, প্রতিরক্ষা কারখানা বিক্রি-সবেতেই আপনার নাম জড়িয়ে রয়েছে।
মমতার অডিও বার্তায় উঠে আসে নোটবন্দির কথা। তিনি বলেন, মোদিজি, আপনি নিজের এবং আপনার দলের স্বার্থে দুই হাজার টাকার নোট বাতিল করেছেন। তাতে দেশের কোনও উপকার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নিজেদের দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেন না বলেও মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ। আপনার দলের যাঁরা চরিত্রহননের কাজ করেন, যাঁরা মহিলা কুস্তিগিরদের অসম্মান করেন, যাঁরা মণিপুরে অন্যায় করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আপনি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এই প্রসঙ্গেই মমতা পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনার দলের লোকেরা বাংলার ১৬-১৭ জন মানুষকে খুন করেছে। আপনি তাদের বাতাস দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আমার কোনও দোষ নেই, গ্রেফতারের আগে মাকে ফোন সৌরভের
লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়েও প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi Prime Minister of India) বাংলার কথা টেনে এনেছিলেন। পাশাপাশি বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটেরও সমালোচনা করেন তিনি। শনিবার কোলাঘাটের ভার্চুয়াল সভায় তিনি ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক। মমতা তার পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি। তিনি বলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়া জোট সম্পর্কে নানা আপত্তিজনক মন্তব্য করে চলেছেন। আসলে উনি চাইছেন, গরিব মানুষ মারা যাক, সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে থাকুক। শুধুমাত্র বিজেপি থাকবে। মমতা বলেন, আপনি সব সময় মানুষকে বোকা ভাববেন না। কিছু সময় কিছু মানুষকে বোকা বানানো যায়। কিন্তু সব সময় সব মানুষকে বোকা বানানো যায় না। আপনি আগে নিজের চেহারা দেখুন।আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও।
পাশাপাশি মমতা এদিন টুইট করে বিচার ব্যবস্থার উদ্দেশে দেশকে বাঁচানোর ডাক দেন। কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচন কমিশনার মনোনয়নের প্যানেল থেকে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার জন্য বিল এনেছে। সেখানে তাঁর জায়গায় একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রাখার কথা বলা হয়েছে। তারই প্রতিবাদ করে মমতা লেখেন, এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকেও তাঁবে রাখতে চাইছে সরকার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সরকার কি বিচার ব্যবস্থাকে মন্ত্রী পরিবেষ্টিত ক্যাঙারু কোর্ট বানাতে চাইছে। তিনি লেখেন, আমরা চাই, বিচার ব্যবস্থা দেশকে বাঁচাক।