কলকাতা: পুজোর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে তিনি বলেন, এখন থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও বহিরাগতকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যারা পড়ুয়া, তারাই কেবল থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাঁর নির্দেশ, তৃণমূল কাউন্সিলরদের এবার থেকে টিএমসিপির পাশে থাকতে হবে।
এদিনের সমাবেশে মমতা সরাসরি যাদবপুরের ব়্যাগিং প্রসঙ্গের উল্লেখ না করেও বিজেপি যুব মোর্চা এবং অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের মিছিলের নিন্দা করেন। ওই দুই সংগঠনের নাম নেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কারা যেন মিছিল করেছে যাদবপুরে। সেই মিছিল থেকে গোলি মারো স্লোগান উঠেছে। আমি পুলিশকে নির্দেশ দিচ্ছি, যারা গোলি মারো স্লোগান দিয়েছে, তাদের যেন কাউকে ছাড়া না হয়। কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এসব বলেছে, তাদের পুলিশ যেন গ্রেফতার করে। প্রসঙ্গত, ওইদিন পুলিশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে ৬৩ জনকে গ্রেফতার করে। তারা অবশ্য পরের দিনই জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক নেতারা একা নন, পুলিশ-সাংবাদিকও টাকা তোলেন, বিস্ফোরক দাবি মমতার
এদিকে পুজোর পর ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে আমল দিতে রাজি নয় বিরোধীরা। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকার সময়ই বলেছিলেন, এখন থেকে নিয়মিত ছাত্র সংসদের ভোট হবে। কিন্তু তা হয়নি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ছাত্র সংসদের ভোট তুলে দেওয়া হয়েছে। কাগজে কলমে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদ নেই বটে। কিন্তু সর্বত্র তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ছড়ি ঘোরাচ্ছে। সুজন বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাই সার। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, আসলে তৃণমূল ছাত্র সংসদের ভোট করতেই ভয় পাচ্ছে। কারণ ওরা জানে, ভোট করলেই ভরাডুবি হবে ওদের।
এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রায় কোনও কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়েই নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। বিরোধীরা বারবার ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি করেছে। কিন্তু তাদের কথা কানেই তোলেনি শাসকদল। মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো পুজোর পর ছাত্র সংসদের ভোট হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।