নয়াদিল্লি: আদালতের (Court) সংবাদ নিয়ে সাংবাদিকদের (Journalist) সতর্ক করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (CJI DY Chandrachud)। যে কোনও রায়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশকে উদ্ধৃত করে সংবাদ পরিবেশনে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি আরও বলেন যে, আদালতে বিচারপতি বা বিচারকদের মন্তব্যের অংশবিশেষ নিয়ে খবর করাও উচিত কাজ নয়।
প্রধান বিচারপতির মতে, দেশে আদালতের সংবাদ এখন গুরুত্বের সঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও আদালতে সংবাদের উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মতে, বিচার ব্যবস্থার গল্পকারে পরিণত হয়েছেন আদালতের সংবাদদাতারা। আইনের জটিল দিকগুলোকে অন্ধকারে রেখে নিজেদের মতো গল্প ফাঁদছেন। তাই এজলাসের ভিতরে বা বাইরে বিচারক বা বিচারপতিদের মন্তব্যের খণ্ডাংশকে খবর করে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi Convicted | মোদির অবমাননা, রাহুলকে ২ বছরের কারাদণ্ড, জামিনও দিল আদালত
প্রধান বিচারপতি তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এ ধরনের সংবাদে সাধারণ জনমানসে আদালতের বক্তব্য সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াবে। কারণ, বিচারের রায় বা মন্তব্য অত্যন্ত জটিল ও সূক্ষ্ম তাৎপর্যপূর্ণ সেখান থেকে নিজের পছন্দ মতো অংশকে খবর হিসেবে দিলে মানুষের মনে রায় প্রসঙ্গে ভুল বার্তা যাবে। বিচারক যা বলতে চেয়েছেন, মানুষ তা না বুঝে ভিন্ন কিছু বুঝবেন।
বুধবার রামনাথ গোয়েঙ্কা এক্সেলেন্স ইন জার্নালিজম ২০২৩ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি। বর্তমান সমাজে সাংবাদিকতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে ভাষণে বলছিলেন তিনি। আইন ব্যবস্থা এবং সাংবাদিকতার গুরুত্ব নিয়ে বলতে গিয়ে একথাগুলি বলেন প্রধান বিচারপতি।
তাঁর কথায়, সাংবাদিকরা যদি জটিল বিষয়কে সহজ করার চেষ্টা করেন, তখন তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনওভাবেই বাস্তব বা সত্য কোনওভাবেই চাপা না পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এটা সকলেই বিশ্বাস করে যে, কলম তরোয়ালের চেয়ে শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, এই পেশায় মানুষের গালমন্দও শুনতে হয়। অনেকেই পছন্দ করেন না। সাংবাদিকরা ধারাবাহিকভাবে জটিল বস্তুকে তরলীকরণের চেষ্টা করেন। খেয়াল রাখতে হবে, এভাবে সহজ করার রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে প্রকৃত সত্যকে যেন বলি না দেওয়া হয়। সাংবাদিকের প্রধান কাজ হল জঞ্জাল সাফ করা।
প্রধান বিচারপতি ভুয়ো সংবাদ নিয়েও ভাষণে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভুয়ো সংবাদের ফলে সাম্প্রদায়িক গন্ডগোল বাধতে পারে। যা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর, হানিকারক। তাঁর ভাষায়, সাংবাদিকদের কঠিন প্রশ্ন করতে বাধা দেওয়া হলে এবং সমাজ-সংসারে যা চলছে তা ঠিকঠাক রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হলে গণতন্ত্রের মর্যাদার সঙ্গে তা আপস করা হবে।