কলকাতা: এবার এজলাসে বসেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির দুর্নীতিবাজদের সিবিআই কলার ধরে গ্রেফতার করবে বলে হুমকি দিলেন। বুধবার তিনি বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগে অগুণতি দুর্নীতি হয়েছে। প্রয়োজন হলে দুর্নীতিগ্রস্তদের গ্রেফতার করে তদন্ত চালাবে সিবিআই। সে যত বড় লোকই হোক। আমি সারা দেশের জন্য কিছু করতে পারবো না। কিন্তু মানুষের স্বার্থে রাজ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু করার চেষ্টা করব। তাঁর মতে, ক্ষুদিরাম, বাঘাযতীন, সূর্য সেনের জন্মভূমিতে শিক্ষাক্ষেত্রে এই দুর্নীতি বরদাস্ত করা যায় না।
এদিন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ এসএসসির নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরই এই সংক্রান্ত ৭টি মামলার শুনানি চালান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এতদিন এই মামলাগুলির উপর বিচারপতি সুব্রত তালুকদারেরই ডিভিশন বেঞ্চের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি ছিল। তাই এদিন সব মামলায় ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর আরও নির্দেশ, প্রত্যেক জেলার পুলিস সুপারকে সিবিআই তদন্তে সবরকমের সহযোগিতা করতে হবে। দরকার হলে সিবিআই কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করবে।
ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরই এদিন হাইকোর্টে এসএসসির দুর্নীতি মামলাগুলির শুনানি চলে। বিচারপতি জানতে চান, এজলাসে রাজ্য সরকারের হয়ে কোনও আইনজীবী আছেন কি না। নিস্তব্ধ এজলাসে আইনজীবীদের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। তখনই বিচারপতি বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষাকর্মী এবং শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ভূরি ভূরি দুর্নীতি হয়েছে। যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, কলার ধরে তাদের শাস্তি দেবে সিবিআই।
বিচারপতি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইস্তফা দেওয়ারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। মঙ্গলবার রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকেও মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মন্ত্রী-কন্যা অঙ্কিতাকে যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চনা করে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষিকার চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই বঞ্চিত যোগ্য প্রার্থী ববিতা সরকার আদালতে মামলা করেন। সেই মামলারই শুনানি ছিল মঙ্গলবার। তবে অঙ্কিতা যখন চাকরি পান, তখন তাঁর বাবা মন্ত্রী ছিলেন না। বাম জমানার খাদ্যমন্ত্রী ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা পরেশ অধিকারী সে বছরই (২০১৮) তৃণমূলে যোগ দেন। অভিযোগ, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পুরষ্কার হিসেবেই পরেশের মেয়েকে বেআইনিভাবে স্কুলে চাকরি দেওয়া হয়।