কলকাতা: আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধ ধ্বংস করতে যাদের হাত কাঁপেনি, তাদের হাতে গৌতম বুদ্ধের ভিক্ষাপাত্র কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ কাবুল এখন তালিবানের দখলে। ফতোয়া জারি করে ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে তারা৷ এইরকম জঙ্গি গোষ্ঠীর কব্জায় রয়েছে গৌতম বুদ্ধের ভিক্ষাপাত্র। কাবুল ন্যাশনাল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে এই দুষ্প্রাপ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কিন্তু আর কতদিন?
এখনও সরকার গঠন করেনি তালিবান। উগ্র তালিবান বরাবরই মূর্তি, স্থাপত্যের বিরোধী। তাই একবার তালিবান রাজ জারি হয়ে গেলে কী হবে ওই নিদর্শনের তা নিয়ে চিন্তায় প্রত্নতত্ববিদরা। এর আগে বামিয়ানের প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি নিমেষে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল তালিবান জঙ্গিরা। ইতিমধ্যেই ভারত সরকার ও বিহারের নীতীশ কুমারের সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছে।
গৌতম বুদ্ধ সাধনায় সিদ্ধিলাভের আগে এই ভিক্ষাপাত্রে সংগৃহীত ভিক্ষা থেকেই তিনি নিজের খিদে মেটাতেন। এই সেই ভিক্ষাপাত্র যা সংরক্ষিত আছে কাবুলে। সে সময় তিনি থাকতেন বৈশালী নগরে, যা বর্তমান ভারতের বিহার রাজ্যে অবস্থিত। এই ভিক্ষাপাত্রের উল্লেখ আছে, পরিব্রাজক ফা হিয়েন, হিউয়েন সাঙ এমনকি আলেকজান্ডারের লেখাতেও।
ভিক্ষাপাত্রটির উচ্চতা ৮৬ সেমি
ভিক্ষাপাত্রটি বেলে পাথরের তৈরি। কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ককে জানালেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ইস্টার্ণ জোনের প্রাক্তন অধিকর্তা পাণীকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, ‘এই পাত্রের গায়ে খোদিত আছে ব্রাহ্মীলিপি। ন্যাশনাল মিউজিয়ামের গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে প্রায় ৮৬ সেমি লম্বা পাত্রটি।’
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের প্রকৃত বন্ধু ভারত, পাক মদতেই উত্থান তালিবানের: আফগান তারকা
কিন্তু বিহার থেকে পাত্রটি সুদূর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছল কীভাবে? বাণীকান্ত বলেন, ‘আনুমানিক দ্বিতীয় শতকে পেশোয়ারের রাজা ছিলেন কণিষ্ক। তাঁর সাম্রাজ্য ছিল পূর্বে কাশ্মীর পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি দক্ষিণ ভারতে সাম্রাজ্য বিস্তারে এসেছিলেন। সেই সময়ই তিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। পেশোয়ারে ফেরার পথে তিনি গৌতম বুদ্ধের ভিক্ষাপাত্রটিকে নিয়ে যান সঙ্গে করে।’
কাবুলের মিউজিয়ামে রাখা আছে ভিক্ষাপাত্রটি
আরও পড়ুন: কাবুলে উদ্ধারকারীদের বিমান ছিনতাই, নিয়ে যাওয়া হল ইরানে
তারপর আরও হাত ঘুরে সেটার ঠাঁই হয় কাবুলের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে। এ বার সেই মূল্যবান জিনিসটিকে তালিবান জঙ্গিপনার হাত থেকে আদৌ বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পুরাতত্ত্ববিদরা।
আরও পড়ুন: সপ্তাহ পেরিয়েও ভিড় কমছে না কাবুল বিমানবন্দরে