লন্ডন: প্রায় ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিমানসেবিকাদের জন্য হিজাব পরা চালু করল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ (British Airways)। কোম্পানির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারা বিমানসেবিকাদের (Female Cabin Crew) জন্য নতুন ইউনিফর্ম (New Uniform) চালু করছে। বিমানসেবিকারা এখন থেকে জাম্পসুট পরতে পারবেন। কোম্পানি জানিয়েছে, এই প্রথম জাম্পসুট পরা চালু করা হচ্ছে। এছাড়াও বিমানসেবিকারা টিউনিক এবং হিজাব (Hijab) পরেও কাজ করতে পারবেন।
ব্রিটিশ ফ্যাশন ডিজাইনার ওজায়োল্ড বোয়েটাং গত ৫ বছর ধরে বিমানকর্মীদের জন্য নয়া পোশাক তৈরির কাজ করছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে নয়া পোশাক চালু করা যায়নি। পুরুষ বিমানকর্মীরা থ্রি-পিস স্যুট পরতে পারবেন। অপরদিকে মহিলারা স্কার্ট অথবা ট্রাউজার বা জাম্পসুট যা ইচ্ছে পরতে পারেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রে মহিলারা টিউনিক বা হিজাব পরতে পারবেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। সামনের গ্রীষ্মের মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্রায় ৩০ হাজার কর্মীর জন্য এই নয়া পোশাকবিধি চালু হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: Joshimath Sinking: জোশিমঠের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলার সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির
উল্লেখ্য, নয়া পোশাকবিধির মধ্যে হিজাব চালু করার বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এই হিজাব নিয়েই গোটা ইরান দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে জ্বলছে। সেদেশের কট্টরপন্থী সরকার মেয়েদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার পর থেকে এবার বিদ্রোহ জেগে উঠেছে গোটা দেশ জুড়ে। রক্তক্ষয়ী সেই সংগ্রামে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। তাঁদের মধ্যে বহু বিদেশিও রয়েছেন। ইরানের হিজাব-বিরোধী আন্দোলন যখন একটি আন্তর্জাতিক চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে, তখন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমানসেবিকাদের হিজাব পরার অধিকার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শুধু ইরান কেন, ভারতেও হিজাব নিয়ে বেশ কিছু আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। মিশনারি স্কুলে বা কলেজে হিজাব পরে স্কুলে ঢোকায় নিষেধ করা নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কর্নাটক থেকে প্রায় গোটা দেশে হিজাব নিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিষয়টি বহু জায়গায় আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এই অবস্থায় বিলাতি বিমান কোম্পানি সেবিকাদের পোশাকবিধিতে হিজাব সংযুক্ত করায় চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই।