কলকাতা: নাট্যকার, থিয়েটার-বিশেষজ্ঞ ব্রাত্য বসু এ বছরের সাহিত্য অকাদেমি সম্মান পাচ্ছেন। ব্রাত্য বসু রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীও বটে। সিপিএম জমানায় ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’ নাটকের মধ্যে দিয়েই ব্রাত্য বসুর উত্থান। সেই নাটকের পরিচালক ছিলেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। নাটকের সংলাপে ছিল প্রতিবাদ আর সময় বদলানোর কথা। সে সময় বামেদের রোষের মুখেও পড়তে হয় এই নাটককে। বহু থিয়েটার হলে ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’-এর শো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ব্রাত্য বসু মূলত থিয়েটারের লোক। পেশায় শিক্ষাবিদ। প্রফেসর। নেশা বাংলা নাটক। আর নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখা। মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয় ‘মীরজাফর ও অন্যান্য নাটক’। সেই নাটকের রচয়িতা হিসেবেই এ বছরের সাহিত্য অকাদেমি সম্মান পাচ্ছেন ব্রাত্য বসু। ব্রাত্য ছাড়াও বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্য চর্চা করে আরও উনিশ জন লেখক এই সম্মান পাচ্ছেন। শুধুমাত্র কবিতা লিখেই সাহিত্য অকাদেমি সম্মান পাচ্ছেন আট জন সাহিত্যিক। তার মধ্যে অবশ্য কোনও বাঙালি কবি নেই।
বাংলা ভাষায় বহু নাটক লিখেছেন ব্রাত্য বসু। নয়ের দশক থেকে সমানে থিয়েটার নিয়ে কাজ করে চলেছেন। সেই সময় থেকেই গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের অন্যতম মুখ তিনি। শুধু নাটক লেখা না, মঞ্চের পিছনের কারিগরি, অর্থনৈতিক দিকটি নিয়েও একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন ব্রাত্য। তবে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’ লিখেই। পরে অনিল আচার্য সম্পাদিত ‘অনুষ্টুপ’ পত্রিকায় সেই নাটক প্রকাশিত হয়। অনুষ্টুপে অনিল আচার্য লিখেচিলেন, যে তাঁর পত্রিকা কোনও রাজনৈতিক দলের না।
ব্রাত্য বসু লিখেছিলেন, সে সময় সাতাশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বাম দলের বিরুদ্ধে সরাসরি। কোনও আড়াল না রেখেই। রিপ ভ্যান উইঙ্কলকে দীর্ঘ ঘুমের দেশ থেকে ডেকে তুলেছিলেন তিনি। ক্ষমতালোভী বামপন্থী শাসন আর আদর্শহীনতা নিয়ে একের পর এক সংলাপ রচনা করেছিলেন। সমালোচনাও হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি জুটেছিল প্রশংসা। তারপর থেকে আর থামেননি ব্রাত্য বসু। কলম থেমে থাকেনি।