কলকাতা: নবান্ন এবং রাজভবনের চাপানউতোর নতুন কোনও খবর নয়। কিন্তু এ বার যেন সেই বিতর্ক নয়ামাত্রা পেতে চলেছে। রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির (Bratya Basu-Jagdeep Dhankhar) আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। শুক্রবার এমনই ভাবনাচিন্তার কথা জানিয়েছেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীর (Bratya Basu-Jagdeep Dhankhar) নাম প্রস্তাব করার কথা। যদি এই ভাবনাচিন্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়, তাহলেই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষাকাঠামো অনুসারে যে কোনও রাজ্য নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হয়ে থাকেন সেই রাজ্যের রাজ্যপাল। রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক পদমর্যাদায় এই পদটি লাভ করেন। একই রকম ভাবে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি হয়ে থাকেন পরিদর্শক তথা ভিসিটর। সেই হিসেবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি। কলকাতা, যাদবপুরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনখড়।
কিন্তু এই জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মমতা সরকারের আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক। একাধিক ইস্যুতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি শিক্ষাও। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘এমন আচার্যের উপস্থিতির জন্যই রাজ্যে শিক্ষায় দুরবস্থা তৈরি হচ্ছে। কোনও বিল পাঠালে তা আটকে রাখছেন। কোনও সহযোগিতা করছেন না।’ ব্রাত্য আরও বলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের মতবিরোধ হতেই পারে। তবে সবকিছুই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। ব্রাত্যর কটাক্ষ, আলোচনায় যেতেই চান না এই রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন : Maa Canteen: রাজ্য-রাজ্যপাল ফের সংঘাত, ‘মা’ ক্যান্টিনের বরাদ্দ নিয়ে রিপোর্ট তলব ধনখড়ের
দিন কয়েক আগেই কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান আচার্য হওয়ার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদটির কথা উল্লেখ করেছিলেন। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, অন্য রাজ্য ভাবতে পারলে আমরা নই কেন? এর পরই তিনি জানান, শিক্ষা দফতরের এই ভাবনাচিন্তা প্রস্তাব আকারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। যদি সেখান থেকে সবুজ সংকেত মেলে, তাহলেই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ।
এইভাবে আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগ করার দায়িত্ব দেওয়া যায় কি? সাংবিধানিক এই প্রশ্নটিও উঠতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের বক্তব্য, ‘বিষয়টির সাংবিধানিক দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত কোনও ভাবেই কাম্য নয়।’