জয়পুর: রাজস্থানের দু’বারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ‘রাজকন্যা’ বসুন্ধরা রাজে কি রাজ্য বিজেপিতে কোণঠাসা হতে চলেছেন? দলের গঠিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি থেকে তাঁর বাদ পড়া অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। যদিও বিজেপি নেতারা সেই অনুমান উড়িয়ে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও রাজপুত রাজনীতিতে বসুন্ধরাকে নীতি নির্ধারক দুটি কমিটি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়াকে অনেকেই ভ্রু কুঁচকে দেখতে শুরু করেছেন। কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে এ বছরের শেষ নাগাদ ভোট হবে। তার আগে বৃহস্পতিবার বিজেপি দুটি নির্বাচন কমিটি গঠন করেছে। দেখা যাচ্ছে, কোনও কমিটিতেই স্থান পাননি দু’বারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা।
শুধু বসুন্ধরা নন, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বিরোধী দলের ডেপুটি লিডার সতীশ পুনিয়া, বিরোধী দলনেতা রাজেন্দ্র রাঠোর এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকেও দুটি কমিটিতে রাখা হয়নি। এই ঘোষণার পরপরই গতকাল দলের একটি সদস্য সংগ্রহ অভিযান ছিল। এছাড়াও কোর কমিটির একটি বিশেষ বৈঠক ছিল। জয়পুরের সেই দুটি অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি সিন্ধিয়া-রাজকন্যাকে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরি জঙ্গি ইয়াসিন মালিকের স্ত্রী পাক তদারকি সরকারে
বসুন্ধরার বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অরুণ সিং বলেন, উনি নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় অংশ নেবেন। উনি জাতীয় সহ সভানেত্রী। ভোটে তাঁর মহত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। আমরা সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা করি। তাঁর দাবি, যে নির্বাচন কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে সব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতাদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এই কমিটিগুলিতে সমাজের সব ক্ষেত্রের নেতাদের ভাগীদারি রাখা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি বলেন, ভোটে শীর্ষ সব নেতারা প্রচারে আসবেন।
হিমাচল প্রদেশ ও কর্নাটকে সরকার বিরোধী হাওয়ায় কংগ্রেসের কাছে বিরাট ধাক্কা খাওয়ায় রাজস্থান নিয়ে অতি সাবধানে পা ফেলতে চাইছে পদ্ম শিবির। কারণ, এই বসুন্ধরা রাজে সরকারের আমলের দুর্নীতি নিয়ে বছরখানেক ধরে সরব শচীন পাইলট। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বসুন্ধরার বিরুদ্ধে তদন্ত করছেন না, এই অভিযোগে পাইলট বিস্তর আন্দোলন করেন। গেহলট-পাইলটের দূরত্ব এতটাই বেড়ে যায় যে, বিষয়টি নিয়ে হাইকমান্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
সে কারণে মনে করা হচ্ছে, দুর্নীতি ইস্যুতে বসুন্ধরার প্রতি জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। কংগ্রেসও বসুন্ধরাকে নিশানা করে প্রচারে মাত করতে পারে। তাই সরকার বিরোধী হাওয়াকে কবজা করতে পালে যাতে আগাম কোনও ছিদ্র না থেকে যায়, সে কারণেই কলঙ্কের বিন্দুমাত্র দাগ রয়েছে এমন নেতানেত্রীদের দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। এইভাবে শচীন পাইলটের মতো তরুণ কংগ্রেস নেতাদের টাইট দিতে চাইছে বিজেপি।