কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে আমেরিকা। শুধু আন্তর্জাতিকমহলেই নয়, ঘরেও চাপের মুখে পড়তে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। সেই চাপের মুখেই এবার পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট । সেনা প্রত্যাহারের পূর্ব নির্ধারিত দিনের পরেও সেখানে সেনা মোতায়েন রাখার ইঙ্গিত দিলেন জো বাইডেন। যার অর্থ আগামী ৩১ অগাস্ট আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত হতে পারে বলেই মার্কিন প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: তালিবান আতঙ্ক উপেক্ষা করে স্বাধীনতা দিবসে রাস্তায় আফগান শিশু-মহিলারা
বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত রবিবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালিবান। তারপরে দেশজুড়ে শুরু হয় নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেই সময় গোটা বিশ্বের নজর ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তৃতার দিকে। যদিও সেই বক্তৃতায় মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকেই সঠিক বলেই দাবি করেন তিনি । যদিও আফগানিস্তান পরিস্থিতির জন্য আশরাফ ঘানির ওপরেও দোষ চাপিয়ে তিনি বলেন আফগান সরকারের এই অবিশ্বাস্য পতন সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত বলে জানিয়েছিলেন । কিন্তু বর্তমানে আফগানিস্তানে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন । যার অর্থ ৩১ অগাস্টের পরেও হয়তো আফগান মাটিতে মার্কিন সেনার গতিবিধি পরিলক্ষিত হতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিকমহল।
President Biden defends policy decisions as Afghanistan, booster shot fallout builds. In an exclusive interview with ABC News’ @GStephanopoulos, the president defended his administration’s strategy on both fronts. https://t.co/TQU6xnKfpC pic.twitter.com/lag1DgyF8e
— ABC News (@ABC) August 19, 2021
শুধুমাত্র নির্ধারিত সময়ের পর সেনা মোতায়েন রাখাই নয়, প্রয়োজন হলে আগামী দিনে ফের আফগানিস্তানে ফের সন্ত্রাসদমন অভিযান চালাতে পারে আমেরিকা । সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছিলেন বাইডেন। তাঁর যুক্তি ছিল, আফগানিস্তানে পুনরায় তালিবান দখলে দখলে এলে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে আলকায়দা, দায়েশ কিংবা হক্কানি নেটওয়ার্কের মতো জঙ্গিগোষ্ঠিগুলি।
আরও পড়ুন: জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল, আসাদাবাদে গুলি চালাল তালিবান
মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, আমেরিকায় টুইন টাওয়ারে হামলার পরেই আল কায়দার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তদকালীন আমেরিকা । সেই সময় সহযোগী ন্যাটো এবং ব্রিটেনকে সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশ করে মার্কিন সেনা । সূত্রের খবর, গত ২০১০ সালে আফগানিস্তানে সেনার সংখ্যা ছিল ৯০০০০ ।
পরে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। ট্রাম্প জমানায় মার্কিন সেনার সিংহভাগই তুলে নেওয়া হয় আফগানিস্তানের মাটি থেকে।
বর্তমানে মাত্র ৩,৫০০ সেনা রয়েছে আফগানিস্তানের মাটিতে। গত ২০ বছরে ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে ব্রিটেন ও ন্যাটোবাহিনী সেনা প্রত্যাহার করলেও আফগান ভূমি আঁকড়ে পড়েছিল মার্কিন সেনা। কিন্তু ধীরে ধীরে আমেরিকা সেনা কমাতে শুরু করলেই পুনরজ্জীবিত হয়ে ওঠে তালিবান।