বাঁকুড়া : এবারের পুজোতে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের পদ্ম পাড়ি দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়। এর আগেও বিদেশের মাটিতে দেবী দুর্গার পুজো হয়েছে বাঁকুড়ার পদ্ম ফুলে। লালমাটির জেলার শাকসব্জি থেকে ফল, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্যের সঙ্গে অনেক আগেই সুনাম কুড়িয়েছে। এবার ফুলেতেও বেশ কয়েক বছর ধরে বিদেশের মাটিতে সফল বাঁকুড়ার ফুল চাষীরা। গত বছর করোনার জেরে বিদেশের দুর্গা মণ্ডপে পৌঁছতে পারেনি বাঁকুড়ার পদ্ম। তবে এই বছর লালমাটির জেলার জঙ্গলমহলের পদ্ম রওনা দেবে অষ্ট্রেলিয়াতে।
আরও পড়ুন : পুজোর মুখে বাঁকুড়ার বাজার মাতাচ্ছে জঙ্গলি ছাতু
আর কয়েক দিন বাদেই দুর্গা পুজো। আর পুজো মানেই প্রথমেই যে ফুলের প্রয়োজন হয় তা হল পদ্ম। তা দেশের পুজো হোক বা বিদেশের পুজো। বেশ কয়েক বছর আগে বিদেশের দুর্গা মন্ডপে প্রথম যাত্রা শুরু করে বাঁকুড়া জেলার পদ্মফুল। তারপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে ভিন দেশে পাড়ি দিচ্ছে বাঁকুড়ার পদ্ম ফুল। গত বছর করোনার জেরে এই রাজ্য ও ভিন রাজ্যের বিভিন্ন মণ্ডপে পদ্ম ফুল গেলেও বিদেশের মণ্ডপে যেতে পারেনি পদ্মফুল। চলতি বছরের পুজোতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে বাঁকুড়ার পদ্ম। জেলা উদ্যান পালন বিভাগের সৌজন্যে এক্সপোর্টারদের হাত ধরে জেলার চাষীদের পদ্ম পাঠানো হবে অষ্ট্রেলিয়াতে। এরই মধ্যে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে বরাত এসেছে। আরও অনান্য দেশে পাঠানোর জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্যে পাঠানো হয় জঙ্গলমহলের পদ্ম। পদ্ম ফুলের রং এবং গঠন ভালো মানের হওয়ার কারণে বিশেষ করে পুজোর মরসুমে বাঁকুড়ার পদ্ম ফুলের ভাল চাহিদা থাকে। চাষীরা যাতে একটু বেশি উপার্জন করতে পারে তাই এক্সপোর্টারদের মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হয় পদ্ম ফুল।
জঙ্গলমহলের পদ্ম, আর কিছু দিন বাদেই পাড়ি দেবে অস্ট্রেলিয়ায়
আরও পড়ুন : গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্প এবার বালুচরীতে
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের সিমলাপাল ব্লকের পুখুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মন্মথ মাহাতো। যিনি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন পুকুরের লিজ নিয়ে পদ্ম চাষ করেন। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষটির জীবিকা হলো পদ্ম চাষ। বারো মাস এই পদ্ম ফুল চাষ করে বিভিন্ন পুজো পার্বনে বিক্রি করে রুজিরোজগার করেন তিনি। চলতি বছরে প্রায় ১৭টি পুকুর লিজ নিয়ে পদ্ম চাষ করেছেন তিনি। এতদিন তাঁর চাষের পদ্ম বাঁকুড়া জেলার স্থানীয় বাজারে ও বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে এবং কলকাতা ও পাশ্বর্বতী জেলায় বাজারে বিক্রি হয়েছে। এই প্রথমবার তাঁর চাষ করা পদ্ম বিদেশে যাবে। স্থানীয় বাজারে পদ্ম বিক্রি করে তেমন ভাবে লাভের অঙ্ক থাকে না বলেই দাবি তাঁর। দেশের বাইরে গেলে বেশি লাভ পাবেন বলেই আশা তাঁর।