শিলিগুড়ি: বৃহস্পতিবার পাহাড়ে ১২ ঘণ্টা বনধের ( Strike) ডাক প্রত্যাহার করে নিলেন বিনয় তামাংরা। বুধবার অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাং প্রমুখ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, বনধের ডাক দেওয়ায় পাহাড়ের মানুষদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তাই আগামীকালের স্থগিত রাখা হচ্ছে। তবে গোর্খাল্যান্ডের (Gorkhaland) দাবিতে আন্দোলন চলবে। পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে এই আন্দোলন হবে। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। বনধ হলে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে। এব্যাপারে মঙ্গলবারই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বিনয় তামাংয়ের সঙ্গে কথা বলেন। বিনয় তাঁকে জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হবে না। গতকালই শিলিগুড়িতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুমকি দেন, কোনও বনধ-টনধ হতে দেব না। তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেই বিনয় তামাংরা পিছিয়ে এলেন।
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে ১২ঘণ্টা বনধের কথা ঘটা করে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন জিটিএ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ওইদিনই ভানু ভবনের সামনে ২৪ ঘণ্টার জন্য অনশনেও বসেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, হামরো পার্টি সহ অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বুধবার অনশন শেষ হওয়ার পরই বিনয় তামাং এবং অজয় এডওয়ার্ড সাংবাদিক বৈঠক করেই বৃহস্পতিবারের বনধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। তাতে পাহাড়ের মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই বনধের ডাক দেওয়ায় পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন।
প্রশ্ন উঠেছে, বনধের ডাক দিয়ে আবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা তুলে নেওয়া হল কেন। পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে, তাহলে কি গুরুং, বিনয়, অজয়রা এখনও নিজেদের গুছিয়ে উঠতে পারেননি? নাকি মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেই তাঁরা পিছিয়ে গেলেন? অবশ্য তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেই কাজ হয়েছে। বিনয়রা বনধের কতা ঘোষণা করার পরই মঙ্গলবার বিকেলে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেশনে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী কোনও বনধ হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, এখানে এসে শুনলাম পাহাড়ে নাকি বৃহস্পতিবার বনধ ডাকা হয়েছে। আমরা বনধ করতে দেব না। তৃণমূল বনধ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে।
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেই তাঁরা ভয়ে পেয়ে গিয়েছেন, এমনটা মানতে রাজি নন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডরা। বুধবার তাঁরা বলেন, পাহাড়ের মানুষের মনে এই বনধ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া যাতে না হয় তার জন্যই আপাতত তা স্থগিত রাখা হল। তবে ভবিষ্যতে আবার তাঁরা যে বনধের ডাক দেবেন না, এমন কোনও নিশ্চয়তা বিনয়রা দেননি। বিভিন্ন সূত্রের খবর, মাত্র দুদিনের প্রস্তুতিতে বনধ যে সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেই বিরোধীরা পিছিয়ে এলেন। পাশািক্ষ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনেই বনধ হলে অভিভাবকরা খেপে যেতে পারেন, এই বিষয়টিও মাথায় রেখে তাঁরা বনধ তুলে নিলেন।