কলকাতা: মাসখানেক আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সদ্য দিল্লিতে গিয়ে সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। গোটা সময়টাই সাংবাদিকরা বারংবার বিজেপি নিয়ে প্রশ্ন করলেও সেভাবে কিছু বলেননি বাবুল সুপ্রিয়। বিস্ফোরণটা ঘটালেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় ফেসবুক পোস্টে বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করলেন বাবুল। আসানসোলবাসীর উদ্দেশে বিশেষ বার্তাও দিলেন।
বাবুল তৃণমূলে যেতেই বিজেপির ছোট-বড় নেতারা নিয়ম করে তাঁকে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের সরাসরি জবাব দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ফেসবুকে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিজেপি থেকে যিনি আমাকে নৈতিকতার জ্ঞান দিচ্ছেন তাঁকে বলবো, নিজের বাড়ির অন্দর থেকে পাঠটা শুরু করতে। আর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে আমি যা করতে পেরেছি তা আগে করে দেখাতে তারপর যা বলার বলতে | ’ এই তির যে শুভেন্দুর দিকে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: আবার আসিব কি ফিরে? রফি মার্গের বেঞ্চে নস্টালজিক বাবুল
বঙ্গ রাজনীতিতে দলবদল খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু, পদ ছেড়ে দলবদল করেন ক’জন? শিশির অধিকারী-দিব্যেন্দু অধিকারীর কথাই ধরা যাক। কাঁথিতে অমিত শাহের সভামঞ্চে শিশিরকে দেখা গিয়েছিল। আবার হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর একটি সরকারি কর্মসূচির মঞ্চে হাজির ছিলেন দিব্যেন্দু। বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা বাড়ালেও তাঁরা দুজনেই তৃণমূলের টিকিটে জেতা সাংসদ পদ ধরে রেখেছেন।বাবুল স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েও একহাত নিয়েছেন তাঁদের।
ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দুর পরিবারের দুই সদস্যের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বাবুল। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েই জানিয়েছিলেন, প্রতীক ছাড়ার পর আসন আঁকড়ে রাখা অনৈতিক। যারা দলত্যাগের পরও আসন আঁকড়ে রেখেছে তাঁদের উদ্দেশে বাবুলের স্পষ্ট বার্তা, ‘…আড়াই বছর বাকি থাকা সত্ত্বেও বিজেপির হয়ে জেতা সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে একটুও দ্বিধা করিনি… শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে আমি যা করতে পেরেছি তা আগে করে দেখাতে তারপর যা বলার বলতে |’
আরও পড়ুন: দল বদলের এক মাস পর শেষ পর্যন্ত সাংসদ পদ ছাড়লেন বাবুল
বিজেপিকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ। বাবুল লিখেছেন, ‘কাঁকড়ায় ভরা একটি দল, যারা নিজেদের প্রকৃত কর্মীদের সাথে নির্লজ্জ বিশ্বাসঘাতকতা বেইমানি করে আর বহিরাগতদের চার্টার্ড প্লেনে চড়ায়।’ চলতি বছর জানুয়ারি মাসে বৈশালী ডালমিয়া, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রথীন চক্রবর্তী, প্রবীর ঘোষাল সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতাকে চাটার্ড ফ্লাইটে দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে যায় বিজেপি। অমিত শাহের হাত ধরে তাঁরা বিজেপিতে নাম লেখান।
বাবুল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁকে একাধিকবার কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও একাধিকবার আসানসোলে গিয়ে কটাক্ষ করেছেন বাবুলকে। কর্মীদের উদ্দেশে ‘বিশেষ’ বার্তা দিয়েছেন। বাবুল নাম না করে কার্যত তুলোধনা করেছেন দু’জনকে। লিখেছেন, ‘আসানসোলবাসীকে বলব, আপনারা বিজেপির ‘ধান্দাবাজগুলির’ কথায় কান দেবেন না – রাজনীতিতেও ঢুকবেন না |’
আরও পড়ুন: তৃণমূল তারকা প্রচারকের তালিকায় নাম বাদ পড়ার কারণ জানালেন বাবুল সুপ্রিয়
আসানসোলবাসীর উদ্দেশে বাবুলের বার্তা, ‘আমি আপনাদের ছিলাম, আছি থাকবো আর আগামী দিনে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, যিনি অত্যন্ত স্নেহের সাথে আমাকে সব ভুলে শুধুমাত্র বাংলার মানুষের কাজ মন দিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ করে আবার ‘Public Service’-এ ফিরিয়ে এনেছেন, তাঁর নেতৃত্বে আরও অনেক কাজ করে দেখাবো | আপনারা আমার জন্য সবসময়েই special ছিলেন ও থাকবেন | আপনাদের জন্য সবসময়েই কিছু না কিছু EXTRA করার চেষ্টা করবো।’