কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কুখ্যাত আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে কীভাবে খতম করলে আমেরিকা? ২টি ক্ষেপণাস্ত্র কিন্তু কোনও বিস্ফোরণ হয়নি। অন্যান্য সম্পত্তি কিংবা গণ-প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেনি। তাহলে কি আমেরিকা জাওয়াহিরিকে নিকেশ করতে ‘গোপন অস্ত্র’ প্রয়োগ করেছে! এটা নিয়েই এখন চলছে জোর বিতর্ক। দেখা যাক, আফগানিস্তানের কাবুলে জাওয়াহিরির বাড়িতে ঢুকে কী ধরনের ড্রোন হামলায় ৯/১১-র প্রতিশোধ নিল ওয়াশিংটন।
পেন্টাগন ও সিআইএ’র যৌথ অপারেশনে ব্যবহৃত এই ক্ষেপণাস্ত্রের পোশাকি নাম হেলফায়ার আর৯এক্স। এটা এক বিশেষ ধরনের বিস্ফোরকহীন ক্ষেপণাস্ত্র। এতে থাকে প্রচণ্ড ওজনের ৬টি ক্ষুরধার ব্লেড। যা নির্দিষ্ট নিশানায় আঘাত হানার ঠিক আগের মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্রের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে বিমানের পাখার মতো ঘুরতে শুরু করে। এই ড্রোনটিও শব্দনিরোধক, অতএব আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসার সময় শত্রুপক্ষ টের পায় না। অন্তিমে শত্রুকে কুচিকুচি করে কেটে ফেললেও এটিতে বিস্ফোরণ হয় না।
আরও পড়ুন: Zawahiri-Biden: ৯/১১ হামলার প্রতিশোধ! ড্রোন হামলায় আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরিকে খতম করল আমেরিকা
জাওয়াহিরির মৃত্যু ঘোষণার পরও আমেরিকা জানিয়েছে, এই পর্বে কোনও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হয়নি। এই নিয়ে ফের একবার হেলফায়ার আর৯এক্স ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করল আমেরিকা। ২০১৭ সালের মার্চে আল কায়েদা নেতা আবু আল-খয়র আল-মাসরিকে সিরিয়ায় খতম করা হয়েছিল একইভাবে। আবু একটি গাড়িতে যাওয়ার সময় আকাশ থেকে অতর্কিতে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে। গাড়ির মাথার উপর দিয়ে ঢুকে ভিতরে থাকা সকলকে কচুকাটা করে দেওয়া হয়। দেখা যায়, গাড়িটির মাথায় একটি গর্ত হওয়া ছাড়া সামনে বা পিছনের দিকে কোনও ক্ষতি হয়নি। একইভাবে বাড়ির দেওয়াল বা ছাদে গর্ত করেও এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানতে সক্ষম। সেবারও পেন্টাগন বা সিআইএ এই হামলার কথা স্বীকার করেনি।
এই ক্ষেপণাস্ত্রটির আরও একটি ডাকনাম রয়েছে, তা হল ‘নিনজা বম্ব’। আমেরিকা এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োগ করে কেবলমাত্র জঙ্গি নেতাদের খতম করার কাজে। যাতে নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয় না। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, জাওয়াহিরিকে খতম করতেও এই অস্ত্রই ব্যবহার করেছে পেন্টাগন। মার্কিন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কাবুলে তাঁর বাড়ির বারান্দায় একা দাঁড়িয়েছিলেন জাওয়াহিরি। তখনই মার্কিন ড্রোন থেকে ২টি হেলফায়ার ছোড়া হয়। বাড়ির যে ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যেখানে জাওয়াহিরি ছিলেন সেখানে জানালার কাচ ভেঙে গেলেও, অন্য তলাগুলির কোনও ক্ষতিই হয়নি। জাওয়াহিরির পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে থাকলেও তাঁরা অক্ষতই রয়েছেন।