বার্মিংহ্যাম: ফেলুদা, ব্যোমকেশ, শার্লক হোমস, আগাথা ক্রিস্টি ফেল। এ যা থ্রিলার ক্রিকেট ম্যাচ দেখলাম, জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না। এজবাস্টন (Edgbaston) মাঠের হয়তো কোনও মাহাত্ম্য আছে। ২০০৫ সালের সেই টেস্ট ম্যাচ যাঁরা দেখেছিলেন তাঁরাই বুঝবেন। আজকাল টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়ে যাচ্ছে আড়াই-তিন দিনে, সেখানে পাঁচদিন গড়ানো খেলার নিষ্পত্তি হল শেষ লগ্নে।
বেঁচে থাকুক টেস্ট ক্রিকেট (Test Cricket)। শেষ এক ঘণ্টা বাকি, ১৫ ওভার বাকি, এমন সময় কিংবদন্তি অজি ব্যাটার রিকি পন্টিং (Ricky Ponting) বললেন, এই ম্যাচ যেই জিতুক, সেটা তাদের বিখ্যাত জয় হয়ে থাকবে। এই জয় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের লোকগাথায় চিরকাল লেখা থাকবে।
আরও পড়ুন: 2011 World Cup Final | ক্রিকেট ছেড়ে বাসচালকের ভূমিকায় বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা ক্রিকেটার !
১২ ওভার বাকি, অস্ট্রেলিয়ার জিততে চাই মাত্র ২৭। হাতে মাত্র দুই উইকেট। এরকম চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি শেষ কবে দেখা গিয়েছিল মনে নেই। সাত ওভার তিন বল বাকি, জিততে চাই মাত্র ১১ রান। নাথান লায়ন (Nathan Lyon) কী করলেন? স্টুয়ার্ট ব্রডের (Stuart Broad) ফুল লেন্থ বল সোজা বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দিলেন।
That winning feeling ? #Ashes | #WTC25 pic.twitter.com/mqz4BX7BTi
— ICC (@ICC) June 20, 2023
২০০৫ সালে শেন ওয়ার্ন এবং ব্রেট লির লড়াই সত্ত্বেও মাত্র দুই রানে এজবাস্টনে হেরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। আজ ১৮ বছর পর যেন প্রায়শ্চিত্ত হল। প্যাট কামিন্সের ব্যাট থেকে বেরনো বল থার্ডম্যান বাউন্ডারি ছুঁতেই ইতিহাস সৃষ্টি হল। বাজ পড়ল বাজবল ক্রিকেটের মাথায়। আসলে বাজবল ক্রিকেটের (Bazball Cricket) দোষ না। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৭৩ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হল ইংল্যান্ডের। আর ৫০টা রান করতে পারলে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেত তারা।
আসলে এই ম্যাচে কেউ হারেনি। এই ম্যাচ আসলে টেস্ট ক্রিকেটের জয়। প্যাট কামিন্স (Pat Cummins) আর নাথান লায়নের ৫৫ রানের পার্টনারশিপ ম্যাচ জেতাল। তিন রান বাকি থাকতে বল যখন বাউন্ডারি পেরল, আনন্দে ব্যাট আর হেলমেট শূন্যে ছুড়ে ফেলেন দিলেন অধিনায়ক কামিন্স। এই ম্যাচ তিনিই জেতালেন। বল করে, এবং অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে। অ্যাশেজ সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। পরের ম্যাচ লর্ডসে।