এটকে মোহনবাগান–২ কেরালা ব্লাস্টার্স–১
(কার্ল ম্যাকহিউ–২) ( দিয়ামানতাকোস)
১৬ মিনিটের মধ্যেই পিছিয়ে পড়ার পর এটিকে মোহনবাগান সল্ট লেক স্টেডিয়ামে যা ফুটবল খেলল তা তাদের সমর্থকদের মন ভরাতে বাধ্য। ম্যাচের ধারা অনুযায়ী আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল সবুজ মেরুন দলের। মনবীরের হেড পোস্টে লেগে ফিরে না এলে কিংবা বক্সের মধ্যে গোল করার সুযোগগুলো হেলায় না হারালে ব্যবধান হত আরও বেশি। তবে কেরালার হয়ে একটা কথাও বলতে হবে। ৬৩ মিনিটে কে পি রাহুল দ্বিতীব বার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় মোহনবাগানের বেশ সুবিধে হয়ে যায়। ২৭ মিনিট দশ জনে খেলে একটা হোম টিমকে হাটকানো খুব মুশকিল। পাশাপাশি এটাও ঠিক, মোহনবাগানের একটা নায্য পেনাল্টি রেফারি দেননি। সব মিলিয়ে শনিবারের এই ম্যাচে উত্তেজনার বেশ ভাল রকম উপাদান ছিল। এবং শেষ পর্যন্ত মোহনবাগান জিতে ১৯ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত লিগ টেবলে তিন নম্বরে থেকে গেল। সামনের শনিবার ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে জিতলে তারা তিনেই থাকবে। এবং এলিমিনেটরের ম্যাচটা নিজেদের মাঠে খেলার সুযোগ পাবে। মোহনবাগানের এদিনের জয় তাদের দলগত সংহতির ফল, কিন্তু আলাদা করে বলতে হবে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কার্ল ম্যাকহিউর কথা। দুই অর্দ্ধে দুটো সুন্দর গোল করে তিনি দলকে জেতালেন এবং নায্য ভাবেই ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেলেন।
কেরালা আজ পর্যন্ত এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জেতেনি। ইদানিং তাদের গ্রাফটাও খুব খারাপ। এই নিয়ে তারা পর পর পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচে হারল। তবে তার জন্য তাদের এলিমিনেটরে খেলা আটকাবে না। এদিন শুরু থেকেই কেরালা অ্যাটাকিং ফুটবল খেলতে শুরু করে। সেই সময় বাগানের মাঝ মাঠের উপর চাপ বাড়ছিল। গ্লেন মার্টিন্স এবং কার্ল ম্যাকহিউ মিলে সেই চাপ সামাল দিতে পারছিলেন না। অনেক দিন পরে মাঠে নেমে হুগো বুমো ছিলেন শুধুই প্যাসেঞ্জার। বিরতির পর তাঁকে তুলে নিতে বাথ্য হলেন কোচ। তাঁর পরিবর্তে ফেদেরিকো গালেগো নামায় বাগানের চাপ বাড়ে। বিরতির পর প্রথম পনেরো মিনিট ধুলো উড়িয়ে দিয়েছে মোহনবাগান। তখনই তাদের গোল প্রাপ্য ছিল। কিন্তু দিমিত্রির সেন্টার থেকে মনবীরের হেড পোস্ট লাগলে গোল হয়ে কী করে। সেই চাপটা সামলে বেশ আক্রমণে ফিরতে শুরু করল কেরালা। কিন্তু ৬৩ মিনিটে কে পি রাহুলের লাল কার্ড দেখাটা তাদের বিরুদ্ধে চলে গেল। দ্বিতীয় বার রাহুল হলুদ কার্ড দেখলেন আশিক কুরুনিয়নকে পেছন থেকে ল্যাং মেরে। এবং এর আট মিনিটের মধ্যে বাগানের দ্বিতীয় গোল। আশিস রাইয়ের ফ্রি কিকটা খুব সুন্দরভাবে ম্যাকহিউর জন্য নামিয়ে দিলেন মনবীর। বাঁ পায়ের দুর্দান্ত ভলিতে গোল করে ম্যাচ জেতালেন ম্যাকহিউ। ২৩ মিনিটে মোহনবাগানের গোল শোধও তাঁরই। এবার দিমিত্রির ফ্রি কিক হেড করে গোল করলেন কার্ল। কেরালার গোলকিপার প্রভুসুখন গিল এদিন খুন জড়োসড়ো ছিলেন। আরও বেশি গোল খেতে পারতেন। কপাল জোরে বেঁচে গেছেন। অনেক দিন পর মনবীরকে বেশ ভাল লাগল। নিজের পছন্দমতো রাইট উইংয়ে তিনি দুর্দান্ত খেললেন। মন্দ নন আশিক কুরুনিয়নও। কার্ড এবং চোট সমস্যা কাটিয়ে পুরো টিমটাকে পেয়ৈছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। প্লেয়াররা তার মর্যাদা দিয়েছে।
তবে ম্যাচের প্রথম গোলটা কিন্তু কেরালার। বক্সে ঢুকে নিজেদের মধ্যেে করতে বল দেওয়া নেওয়া করতে করতে দিয়ামানতাকোসের দুর্দান্ত ভলি বিশাল কাইথকে দাঁড় করিয়ে রেখে গোলে ঢুকে যায়। ডার্বির আগে বাগানের এই জয় তাদের মনোবল বাড়াবে নিঃসন্দেহে। টিমে কোনও চোট আঘাত নেই। কার্ড সমস্যা নেই। বাগান এখন যে ফর্মে আছে তাতে ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে তারাই ফেভারিট।