আর্জেন্তিনা–১ ব্রাজিল–০
(অ্যাঞ্জেলো দিমারিয়া)
অবশেষে শাপমুক্তি লিওনেল মেসির। বর্ণময় ফুটবল জীবনে দেশের জার্সি গায়ে কোনও ট্রফি ছিল না তাঁর। রবিবার সকালে সেই ব্যর্থতার জীবন কাটিয়ে তিনি উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন ট্রফির আলোয়। কোপা আমেরিকা ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে মেসির আর্জেন্তিনা চ্যাম্পিয়ন হল। আঠাশ বছর পর কোপা জিতল মারাদোনার দেশ। ১৯৯৩ সালে ইকোয়েডরে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকা ফাইনালে মেক্সিকোকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোপা জিতেছিল আর্জেন্তিনা। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক হয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। আর এবারের নায়ক হলেন অ্যাঞ্জেলো দিমারিয়া। ২২ মিনিটে রডরিগো ডি পলের থ্রূ পাস ধরে ব্রাজিল গোলকিপার এডেরসনের মাথার উপর দিয়ে বল তুলে দিয়ে গোল করলেন প্যারিস সাঁজামার উইঙ্গার। ম্যাচ শেষ হওয়ার দু মিনিট আগে গোল করার সোনার সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। আর ব্রাজিল? এর আগে যতবার তাদের দেশে কোপা হয়েছে ততবারই তারা জিতেছিল। এই প্রথম তারা হেরে গেল। আর সে জন্য নেমারের আর চ্যাম্পিয়ন হওয়া হল না।
ব্রাজিল কিন্তু খুব খারাপ খেলেনি। শুধু বল পজেসনেই নয় (৬০-৪০) তারা সুযোগ সৃষ্টিতেও এগিয়ে ছিল। কিন্তু প্রাপ্ত সুযোগগুলি থেকে গোল করতে না পারায় এবং আর্জেন্তিনা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের চমৎকার গোলকিপিং ব্রাজিলকে হতাশ করেছে। সেমিফাইনালে যে দল নামিয়েছিলেন তিতে, সেই দল অপরিবর্তিত রাখেন তিনি। উল্টো দিকে আর্জেন্তিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি দলে পাঁচটা পরিবর্তন করেন। যার একটি ছিল সেমিফাইনালে যিনি পরে নেমেছিলেন সেই দিমারিয়াকে শুরু থেকেই নামিয়ে দেওয়া। ৩৩ বছর বয়সী দিমারিয়ারও এটি প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি। ২০১৪ সালে বিশ্ব কাপ ফাইনাল তিনি খেলতে পারেননি। এবার কোপা ফাইনাল পারেলেন এবং দলকে জেতালেন।
কি করলেন মেসি? খুব ভাল খেলতে পারেননি। তবে আসলে একটু স্নায়ুর চাপে ভুগছিলেন। না হলে যে গোল তিনি মিস করেছেন তা সচরাচর করেন না। তবে মেসির মতোই ট্রফি জেতার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল আর্জেন্তিনা। সেন্টার ব্যাক নিকোলাস ওটোমেন্ডি চমৎকার খেলেছেন। ব্রাজিলের ভয়ঙ্কর অ্যাটাকিং লাইনকে আটকেছেন। যেটা পারেনি ব্রাজিল ডিফেন্স। বিশেষ করে বার বার ভুল করেছেন লেফট ব্যাক রেমন লোরি। তাঁর পাশ দিয়ে বার বার বল নিয়ে বেরিয়ে গেছেন দিমারিয়া। সৌভাগ্য তাঁর। যে তাঁর দলকে একটার বেশি গোল খেতে হয়নি।
তবে এ সব কথা এখন খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। একটাই কথা হল মেসির আর্জেন্তিনা কোপা আমেরিকা জিতেছে। ট্রফি উঠেছে মেসির হাতে। যে ট্রফির জন্য তিনি এতকাল অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন, তা ফুটবল দেবতা তাঁর হাতে তুলে দিলেন। বিশ্ব ফুটবল আবার মেসিময় হল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো পাঁচ বছর আগে ইউরো জিতেছিলেন, এত দিনে মেসি তাঁকে ছুঁলেন মহাদেশীয় ট্রফি জিতে। বিশ্ব কাপ দুজনেরই অধরা। অতএব এখন থেকে কাউন্ট ডাউন শুরু দোহা বিশ্বকাপের। অপেক্ষা সামনের বছরের নভেম্বর পর্যন্ত।