কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: একেবারে আছাড়িপিছাড়ি কান্না। কেঁদে ভাসালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এতটাই চিৎকার করে কাঁদছিলেন যে, জোকা ইএসআইয়ে ঢোকার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তিনি আর ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে ওঠার মতো অবস্থাতেও ছিলেন না। শুক্রবার আদালতের নির্দেশমতো ‘অপা’কে ফের শারীরিক পরীক্ষার জন্য জোকা ইএসআইয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ‘অসুস্থ’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি’র গাড়িতে এনে হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালে ঢোকানো হয়।
তার ঠিক আগেই অর্পিতাকে নামাতে গিয়ে দেখা গেল, সিটে বসে হাপুস নয়নে কাঁদছেন তিনি। এই কদিন আগেই তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় অর্পিতা সাংবাদিকদের উদ্দেশে চিৎকার করে বলেছিলেন, এসব বিজেপির চক্রান্ত। পরদিন আদালতে হাজিরার সময়ও স্বঘোষিত এই তৃণমূল কর্মী নিজেকে শক্ত রেখেছিলেন। কিন্তু, ইডির ক্রমাগত জেরা এবং একের পর এক গুপ্তধনের ভাণ্ডার বেরিয়ে পড়ায় মানসিক জোর একেবারেই ভেঙে পড়েছে অর্পিতার। সেটা এদিন তাঁর কান্নার বহর দেখেই তা বোঝা গেল।
অপাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে, খবর পেয়েই সেখানে ভিড় জমান বহু মানুষ। তার সঙ্গে তো সাংবাদিকরা রয়েছেনই। ফলে তাঁদের সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের। গাড়ির দরজা খুলতেই দেখা গেল, ভিতরে ছটফট করতে করতে কাঁদছেন অর্পিতা। নিজে নামার মতো অবস্থায় নেই। মহিলা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে তখন ধরে নামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, ঘনিষ্ঠতম আত্মীয় বিয়োগের মতো কাঁদতে থাকায় অর্পিতার তখন সে ক্ষমতাও ছিল না। গাড়ি থেকে পা বের করতেই তিনি শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে বসে পড়েন।
তখন আশপাশের কর্মীরা তাঁকে দুদিক দিয়ে ধরে তুলে সোজা করে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। অনেক কষ্টে টালমাটাল পার্থ-বান্ধবীকে ধরে কোনওমতে হুইল চেয়ারে বসানো হয়। হুইল চেয়ারে পায়ের পাতা রাখার জায়গায় তিনি ডান পা না রাখায় এক হাসপাতাল কর্মী সেটা সোজা করে ধরে রাখেন। যাতে দৌড়ে ভিতরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর পায়ে না চোট লাগে।
এর আগে অবশ্য টাকার পাহাড়ের ‘শাহজাদি’ অর্পিতা ইডির বিরুদ্ধে অত্যাচার করার অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু, এদিন তাঁকে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে। সব হারানোর কান্নায় এদিন ডুবে গেল তাঁর এতদিনকার দপরব। পার্টি তাঁর ‘গুরু’কে দক্ষিণা দিয়ে বিদায় করে দেওয়ার খবর পেয়ে বোধহয় অর্পিতা বুঝতে পেরেছেন, তিনি কোন ছা!