নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে পাঁচ রাজ্যের সেনাপতি বদল করল বিজেপি। এর মধ্যে তেলঙ্গানা এবং মধ্যপ্রদেশের মতো দুই ভোটমুখী রাজ্যও রয়েছে। মঙ্গলবার অন্ধপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, পাঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড এবং কর্ণাটকের নয়া সভাপতি (New President) নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দীর্ঘ বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই কয়েকটি রাজ্যের সভাপতি বদলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সোমবার ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রি পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। তারপর এদিন পাঁচ রাজ্যের সভাপতি বদলের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়।
কিষাণ রেড্ডিকে তেলঙ্গানার রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য সভাপতি হলেন আর ডি পুরন্দেশ্বরী। কংগ্রেস থেকে আসা সুনীল জাখরকে পঞ্জাবের রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড বিজেপির নয়া সভাপতি বাবুলাল মরান্ডি।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal | এজলাস পরিবর্তনের কেষ্ট-মিনতি, শুনানি ১৯ জুলাই
পঞ্জাবে শিখের প্রাধান্য বেশি থাকলেও হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ রয়েছে। সেই দিকে নজর দিয়েই কংগ্রেস থেকে আসা সুনীল জাখরকে পাঞ্জাবের রাজ্য সভাপতি করল বিজেপি। গত বছরই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন লোকসভার প্রয়াত প্রাক্তন স্পিকার বলরাম ঝাখরের ছেলে সুনীল। পঞ্জাব কংগ্রেস রাজনীতিতে অমরিন্দর সিংহের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত সুনীল চার দশকেরও বেশি কংগ্রেস রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ঝাড়খণ্ডে দলবদলু বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডিকে রাজ্য সভাপতি ঘোষণা করেছে বিজেপি। ঝাড়খণ্ড বিজেপির নয়া সভাপতি বাবুলাল মরান্ডি ২০০০-০২ সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৬ সালে বিজেপি ছেড়ে নয়া দল ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা গড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। ২০১৯ এ লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির মহাজোটের শরিক ছিল জেভিএম। ভোটমুখী রাজ্যের প্রদেশ সভাপতি হিসাবে আনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) আস্থাভাজন জি কিষেণ রেড্ডিকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে। এমনিতেই তেলঙ্গনায় বিজেপি শক্তি কিছুটা হলেও কমেছে, সেই দিকে গুরুত্ব দিয়েই সভাপতি বদল। দেশম পার্টির জে পি নাডসকে নতুন রাজ্য বিজেপি সভাপতি নিযুক্ত করেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন শেফ মন্ত্রী কিরসি কুমার রেড্ডি জাতীয় সদস্য হিসাবে।
বিজেপির নজরে রয়েছে ভোটমুখী দুই রাজ্য। ইতিমধ্যেই কর্নাটক হিমাচল হাত ছাড়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। তার মধ্যে বিরোধীদের জোট কিছুটা হলেও বিজেপিকে চিন্তায় রেখেছে। বেষ কিছু রাজ্যে বিজেপির শক্তিক্ষয় হয়েছে। কিছুটা বলেও বিজেপি ব্যাকফুটে রয়েছে। কর্নাটক হিমাচলের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই দিকেই নজর রেখেই রাজ্যের সভাপতিদের বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগেই রাজ্যেগুলি সাংগঠনিক শক্তিকে বৃদ্ধি করতে ও মানুষের মনে নিজেদের জায়গা পাকা করতেই নিজেদের শক্তি বৃদ্ধিতে উদ্যোগী মোদি সরকার। এর পাশাপাশি, মোদির সঙ্গে শাহ-নাড্ডার বৈঠকে মন্ত্রী সভার রদবদল নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে আরও বেশ কিছু রদবদল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।