নিউ ইয়র্ক: মানুষ যত বেশি প্রযুক্তি (Technology) ব্যবহার করবে, তার ততবেশি প্রভাব প্রকৃতির উপর পড়বে (Effects on Nature)। তা সে যতই ডিজিটাল প্রযুক্তি (Digital Technology) হোক না কেন। কারণ, ইন্টারনেট (Internet) মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বিশাল বড়ো সার্ভার (Server) প্রয়োজন হয়। আর তার জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণ বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি (Electronic Devices) এবং এনার্জি সোর্স (Energy Source)।
বর্তমানে প্রযুক্তি দুনিয়ার হট টপিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটি (Artificial Intelligence ChatGPT)। ওপেনএআই (OpenAI) সংস্থার তৈরি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স চ্যাটবটের (AI ChatBot) এখন চতুর্থ সংস্করণ (4th Version) ইন্টারনেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জিপিটি-৩ (GPT-3) ও জিপিটি-৪ (GPT-4) এবং চ্যাটজিপিটি পাওয়ার্ড বিং সার্চ ইঞ্জিনের (ChatGPT Powered Bing Search Engine) সঙ্গে এখন যোগ দিয়েছে গুগলের বার্ড (Google Bard)। কিন্তু জানা আছে কি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিভাবে তার অস্তিত্ব (Existence) টিকিয়ে রাখে বা রাখছে? ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (University of California) এবং ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস (University of Texas), এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এনিয়ে সম্প্রতি একটি অধ্যয়ন (Study) চালিয়েছেন। তা থেকে উঠে এসেছে দুর্দান্ত একটি তথ্য।
আরও পড়ুন: Indian Army | Mandarin | চীনকে সামলাতে চীনা ভাষা শিখবে ভারতীয় সেনাবাহিনী
ডেটা সেন্টার (Data Centre)। ইন্টারনেট দুনিয়ায় সারা বিশ্বকে একসঙ্গে যুক্ত রাখতে এবং নিরবিচ্ছিন্ন পরিষেবা দিতে একটা সার্ভার প্রয়োজন। বিশাল বড় এই সার্ভার যেখানে থাকে তাকে ডেটা সেন্টার। এই ডেটা সেন্টারের বিপুল পরিমাণ এনার্জি সোর্স ব্যবহার করা হয়, সবসময় সচল রাখতে। বৈদ্যুতিন ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি (Electronic and Electric Devices) ২৪ ঘণ্টা সচল থাকা মানে তা গরম হবে এবং তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে তাজা জল বা নিঠে জল অর্থাৎ ফ্রেশ ওয়াটার (Fresh Water) প্রয়োজন হয়।
মাইক্রোসফট চ্যাটজিপিটিকে উচ্চপ্রশিক্ষিত (Highly-Trained) এবং আপগ্রেডেড (Upgraded) করে তোলার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ লগ্নি করেছে ওপেনএআই সংস্থায়। এবিষয়ে প্রকাশিত তথ্য বলথে, জিপিটি-৩’কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ৭,০০,০০০ লিটার বা ১,৮৫,০০০ গ্যালন জল লেগেছে। পরিসংখ্যান বলছে, এই বিপুল পরিমাণ জল একটি পারমাণবিক চুল্লির কুলিং টাওয়ার (Nuclear Reactor’s Cooling Tower) ভরে ফেলতে যথেষ্ট। এই একই পরিমাণ জল ৩৭০টি বিএমডব্লু গাড়ি (BMW Cars) অথবা ৩২০টি টেসলা গাড়ি (Tesla Vehicles) তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
চ্যাটজিপিটি সংক্রান্ত অধ্যয়নে বলা হয়েছে, ২০ থেকে ৫০টি উত্তরের জবাব দিতে চ্যাটজিপিটির প্রয়োজন ৫০০ এমএল (500 ml) অর্থাৎ ১৬.৯ আউন্স (16.9 oz) জল। অধ্যয়নে যোগ দেওয়া গবেষকদের বক্তব্য, আপাতত দৃষ্টিতে এই পরিমাণ জল যৎসামান্য মনে হলেও, তা কিন্তু নয়। কারণ, চ্যাটজিপিটির ইউজার বেস (User Base) বিশাল বড়। যেহেতু প্রচুর ট্র্যাফিক (Traffic) এসে ভিড় জমান, সার্ভার সবসময়ই সচল থাকে, তাই তার ব্যবহারও তেমন হয়। এই অবস্থায় ডেটা সেন্টারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রচুর পরিমাণে জল প্রয়োজন। তবেই মাথা ঠান্ডা রেখে অনবরত উত্তর দিতে এবং প্রশিক্ষণ (Training) নিতে পারে চ্যাটজিপিটি।
মার্কিন টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট (Microsoft) শক্তির ব্যবহার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর কার্বোনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালানোর কাজে লগ্নি করেছে। গবেষণা চলছে, কিভাবে বিশাল বড় সিস্টেমকে ট্রেইনিং এবং অ্যাপ্লিকেশন (Training and Application) উভয় ক্ষেত্রেই আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করানো যায়। মাইক্রোসফটের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বোন নেগেটিভ (Carbon Negative), ওয়াটার পজিটিভ (Water Positive) এবং জিরো ওয়েস্ট (Zero Waste) নীতিকে কার্যকর ও বাস্তবায়িত করা।