কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট বাতিলের দাবি তুলল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার বহরমপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) বলেন, এই ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার এবং তাঁর বশংবদ রাজ্য নির্বাচন কমিশন (West Bengal State Election Commission)। তাই আমাদের দাবি, নির্বাচন বাতিল করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে নতুন করে ভোট নেওয়া হোক। অধীরের অভিযোগ, ভোটের দিন তো কারচুপি, ভয় দেখানো, ভোট লুঠ ইত্যাদি হয়েছেই। গণনাকেন্দ্রেও কারচুপি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই ভোটকে আমরা নির্বাচন বলেই মনে করি না।
অধীর বলেন, পঞ্চায়েত ভোট যে প্রহসন হয়েছে, তা সারা ভারতবাসী জেনে গিয়েছে। এবার গণনাতেও ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। যখনই দেখা গিয়েছে, বিরোধী প্রার্থীরা জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখনই সরকারি অফিসাররা গণনা বন্ধ করে দিয়েছেন। দুই তিন ঘণ্টা পর ফের গণনা শুরু হয়েছে। তখন শাসকদলের প্রার্থীকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেস নেতার দাবি, মুর্শিদাবাদে এবার শাসক তৃণমূল বিজেপিকে বাধা দেয়নি। বাধা দেওয়া হয়েছে বাম এবং কংগ্রেসকে। জেলায় যেহেতু কংগ্রেস এবং বামেরা শক্তিশালী, তাই বিজেপিকে জায়গা করে দিয়েছে তৃণমূল। মনোনয়ন পর্ব থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত শাসকদল বিজেপিকে সাহায্য করে গিয়েছে, যাতে মেরুকরণ স্পষ্ট হয়। অধীর জানান, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও জেলায় একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | হাওড়ার সাঁকরাইলে ১৫টি বুথে ফের নির্বাচন হবে
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট হয় সিরিয়াল ভোটিংয়ে। অথচ দেখা গেল, যেখানে গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস জিতেছে, সেখানে জেলা পরিষদ আসনে কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কংগ্রেস শূন্য। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মুর্শিদাবাদে নাকি কোনও গোলমাল হয়নি। অথচ সবাই জানে, এই জেলায় কী পরিমাণ ঝামেলা হয়েছে। ভোটের দিন থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, মুর্শিদাবাদ জেলায় কিছু হয়নি। বিজেপির তথ্যানুসন্ধানী দল মুর্শিদাবাদে আসছে না। এখানেও কারসাজি রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী গতকাল দাবি করেন, ভোটের দিন ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঘোষণা করেন, তৃণমূল সরকার মানবিক। তাই দলমতনির্বিশেষে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অধীর সরকারের এই সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটা লাশের দাম ২ লাখ টাকা। কার টাকা তিনি কাকে দিচ্ছেন। তাঁর কটাক্ষ, এই সরকার দুই লাখিয়া লাশের সরকার হয়ে উঠছে।