কলকাতা: বালেশ্বরে রেল দুর্ঘটনার জন্য রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণের ইস্তফা দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি বলেন, এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তার দায় এড়াতে পারেন না। বন্দে ভারত উদ্বোধন করার জন্য তিনি সবার আগে সবুজ সবুজ ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু রেলযাত্রীদের সুরক্ষার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কোনও চিন্তাভাবনা করেন না। অভিষেকের আরও অভিযোগ, Anti Collision Device ব্যবহার না করার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলমন্ত্রী এই আগে ঘটে করে দুই হাতে রেলের মডেল নিয়ে ওই ডিভাইসের মহড়া দিয়েছিলেন। তৃণমূল নেতার প্রশ্ন কোথায় গেল সে সব ডিভাইস।
তৃণমূল সাংসদ বলেন এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতিকে না জড়ানোয় ভালো। এই মুহূর্তে উদ্ধারকাজ চালানো এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবৎস করে সকলের আশু কর্তব্য হওয়া উচিত। রাজনীতিকে না জড়ানোর কথা বললেও অভিষেক সেই রাজনীতিকেই তুলে আনেন তাঁর বক্তব্যে।
আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident| ধ্বংস্তূপ সরিয়ে কবে স্বাভাবিক হবে পরিষেবা, জানতে চায় আমজনতা
তিনি বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকালেই বালেশ্বরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন, আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ২৪ ঘন্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার দায়িত্ব কাউকে না কাউকে তো নিতেই হবে। দু’চার মাস আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ সংবাদ মাধমের সামনে anti collision device এর ডেমো দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ট্রেনে তা চালু হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকা কালীন এই ডিভাইস কেনার জন্য টাকা বরাদ্ধ করে ছিলেন। অভিষেক বলেন, কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে নরেন্দ্র মোদি সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি করতে পারেন। অথচ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে কেন্দ্রীয় সরকার এই ডিভাইস চালু করতে পারে না ট্রেনে। ওই ডিভাইস থাকলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
তৃণমূল নেতার আরও অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যায় এত বড় দুর্ঘটনার পর রেল মাত্র ৪-৫ জনকে পাঠিয়েছিল যাত্রীদের উদ্ধার করার জন্য। তিনি বলেন, যাঁরা বেঁচে ফিরে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই এটা জানা গিয়েছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ২০১৪ সাল থেকে মোদি সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এত দিন ধরে তারা কী কাজ করল? অভিষেকের অভিযোগ, সব কিছুতে বিজেপি রাজনীতিকে টেনে আনে। চমক দেওয়ার জন্য দু’বছরের কাজ ছয়মাসে শেষ করতে চায় ওরা, যাতে তার সুফলকে রাজনৈতিক দিক থেকে কাজে লাগানো যায়।
তৃণমূল সাংসদ বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কখনও ট্রেনে বসে চড়েন না। তাঁরা ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহার করেন। এই মন্ত্রীরা সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা কী বুঝবেন। এই দুর্ঘটনার জন্য অভিষেক জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচি এদিন বাতিল করে দেন। এদিন হাওড়ার শ্যামপুর আর পাঁচলায় তার রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল।