কলকাতা: বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পাঁচলা-সহ একাধিক জায়গায় শনিবারও গন্ডগোল চলছে। বন্ধ ট্রেন চলাচল। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। কোনও পদক্ষেপে করেনি প্রশাসন। এসব কথা জানিয়ে সাম্প্রতিক হিংসা পরিস্থিতি নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ঘরে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের। বিচারপতি যাতে এদিনই মামলা শোনেন, তার জন্য আইনজীবী চিঠি দেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে।
পয়গম্বর বিতর্ক ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়া সহ বেশকিছু এলাকায় বিশৃঙ্খলা চলছে। বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য বিজেপি নেতা-নেত্রীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিক্ষোভ অবরোধ চলে। ঘটে বেশকিছু হিংসাত্মক ঘটনা। একাধিক গাড়ি, বাইকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত চলে ওই বিশৃঙ্খলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য হাত জোড় করে অনুরোধ করে। নাখোদা মসজিদের ইমামকে দিয়েও অবরোধ তোলানোর বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। গভীর রাত পর্যন্ত অবরোধ চলায় হাজার হাজার মানুষ চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: সাম্প্রতিক হিংসা নিয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি হাইকোর্টে
একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় শুক্রবারও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা কিংবা আধা সেনা নামোনোর দাবি জানিয়ে চিঠি দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। রাজ্যপাল সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে রাতেই রাজভবনে তলব করেন মুখ্যসচিবকে। প্রশাসন হাওড়া জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছে। বুধবার পর্যন্ত গোটা উলুবেড়িয়া মহকুমায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, হাওড়ায় তাদের একাধিক পার্টি অফিস ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনসাতলায় এরকমই একটি পার্টি অফিস শনিবার পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। কিন্তু পুলিস তাঁকে নিউটাউনের বাড়িতেই আটকে রাখে। অভিযোগ, কোনওরকম কাগজ ছাড়াই সুকান্তকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। সেই ঘটনাকে ঘিরেই ধুন্ধুমার ঘটে নিউটাউনে। একথা জানিয়েই মামলা করার আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী সুস্মিতা দত্ত সাহা।