কলকাতা: এও বোধহয় বাকি ছিল। বাঙালির থিমের হামানদিস্তায় প্রতিবছর মা দুর্গা যেভাবে থেঁতো হচ্ছেন, তাতে এ আর নতুন কী? আসন্ন দুর্গাপুজোয় থিমের মানচিত্রে নবতম সংযোজন মেয়েদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মায় সচেতনতা। গোটা বিশ্বে ঋতুমতী মেয়েদের আজও সংস্কারবশত অস্পৃশ্য, ঘৃণা ও লজ্জার পরিবেশে ঠেলে দেওয়া হয়। সেই বেড়া ভেঙে বেরিয়ে আসার নবতম চেষ্টা এই থিম। ঋতুকাল নিয়ে এদেশে বেশ কয়েকটি বাংলা ও হিন্দি ছবিতেও এই বন্ধনমুক্তির ডাক দেওয়া হয়েছে। বিধি ও বিজ্ঞানের বৈপরীত্য এবং সমাজ-দারোগা ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের আসুরিক শক্তির বিনাশে এই থিম এক মহাশক্তির আহ্বান।
গগনেন্দ্রনাথ-নন্দলাল-রামকিঙ্করের দেশে ‘অবলা’ মা কী ছিলেন, কী হইয়াছেন আর কী হইবেন, তা কল্পনা করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। বিষয়-কল্পনার গল্পের গরু একেবারে চড়কগাছে পৌঁছে গিয়েছে। যাবতীয় কুসংস্কারের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও ধর্মের মোহাচ্ছন্ন সংখ্যাগরিষ্ঠ বঙ্গতনয়ারা স্বেচ্ছায় এই বিপ্লব-বটিকা কতটা গিলে খাবেন, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
আরও পড়ুন: Wrestler Protest | আজ গঙ্গায় পদক ভাসিয়ে দেবেন সাক্ষী-বিনেশরা! তারপর আমরণ অনশন
উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লি পুজো কমিটি এবার তাদের পুজোর থিম করছে ‘ঋতুমতী’। যেখানে ঋতুকালীন সমস্যা ও সংস্কার এবং সুস্বাস্থ্য থিম হিসেবে তুলে ধরা হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি দিবস উপলক্ষে পুজো কমিটি তাদের এবছরের প্রচার ব্যানার প্রকাশ করেছে। পুজো কমিটির সম্পাদক ইলোরা সাহা বলেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তির এর চেয়ে ভালো আর কোনও পথ নেই। ঋতুকালকে নিষিদ্ধ চোখে দেখা বন্ধ হওয়া উচিত। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, মেয়েদের ঋতুস্রাব একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। আর তার জন্য তাদের পর্দানসীন করে রাখার কোনও অর্থ নেই। মেয়েদেরও লজ্জিত ও কুণ্ঠিত হয়ে থাকতে হয়। গায়ক সিদ্ধার্থ রায় যিনি সিধু নামে পরিচিত তিনি পুজোর থিম মিউজিক তৈরি করবেন। উল্লেখ্য, গান ছাড়াও সিধু এমবিবিএস ডিগ্রিধারীও।