বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) খারাপ ফল হতেই বিজেপির (BJP) সংগঠনে বড়সড় রদবদল। বাঁকুড়া (Bankura) সাংগঠনিক জেলার ২৮ টির মধ্যে ৯ জন মণ্ডল সভাপতি (Mandal President) পদে রদবদল ঘটানো হল। অপরদিকে, বিষ্ণুপুরে বদলানো হল ২৫ টির মধ্যে ১০ জন মণ্ডল সভাপতিকে। ভরাডুবির কারনেই কি এই রদবদল বিজেপির তা অবশ্য মানছেন না জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির দাবি, স্বাভাবিক নিয়মেই এই বদল হয়েছে। যদিও, তৃনমূলের দাবি, ভয় পেয়েই এই রদবদল ঘটিয়েছে বিজেপি।
লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রাখলে দেখা যাবে বাঁকুড়ায় যথেষ্ঠ ভাল ফল করেছিল গেরুয়া শিবির। জেলার দুটি লোকসভা আসনই রয়েছে বিজেপির দখলে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও ১২ আসনের মধ্যে ৮ আসন দখল করে বিজেপি। যদিও এক বিজেপি বিধায়ক পরে তৃণমূলে ফিরে আসে। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি গেরুয়া শিবির, তেমনটাই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
আরও পড়ুন:Minakhan | TMC | আইন মেনেই মনোনয়ন দিয়েছে, সৌদি থেকে ফিরে দাবি মিনাখাঁর তৃণমূল প্রার্থীর
বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করতে পারলেও বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলাতে বিজেপির ঝুলিতে এসেছে মাত্র ১ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। জেলায় ১৯০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপির ঝুলিতে মাত্র ১০ টি পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সমিতিতে কিছু আসন বিজেপি পেলেও ২২টি পঞ্চায়েত সমিতিতেই একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে জেলার সব পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে। জেলা পরিষদের ৫৬ আসনের মধ্যে সবেধন একটি আসন বিজেপির ঝুলিতে। ফলাফল যে কতটা খারাপ হয়েছে গেরুয়া শিবিরে তা পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেতা একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এবারের নির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। সামনেই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে, তাই তার আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই খারাপ ফল হতাশ করেছে নিচু তলার বিজেপি কর্মীদের। এতগুলো বিধায়ক, দুজন সাংসদের মধ্যে একজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তারপরেও এই খারাপ ফল বিজেপির নিচু থেকে উচু তলায় নেতা কর্মীদের বেশ নাড়া দিয়েছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক মহল থেকে দলের একাংশ। দলের খারাপ পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে, তা নিয়েও দলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনাও। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার ২৮ টি মণ্ডলের মধ্যে ৯ টি মণ্ডলে এবং বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার ২৫ টি মণ্ডলের মধ্যে ১০ টি মণ্ডলে রদবদল ঘটানো হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে বিজেপি। সঙ্গে হতাশ কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধির উদ্যেশ্যেই এই রদবদল ঘটানো হয়েছে। বিজেপির অপসারিত মণ্ডল সভাপতিরা ও দলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, বেশ কয়েকজন মণ্ডল সভাপতির মেয়াদ ৬ বছর অতিক্রম করে যাওয়ায় দলের সংবিধান অনুযায়ী তাদের পদ থেকে সরিয়ে জেলা কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষেত্রে নিস্ক্রিয় পদাধিকারীকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। তৃনমূল অবশ্য এই রদবদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। শাসক শিবিরের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে বিজেপি রদবদল ঘটিয়ে সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে তেমন লাভ হবে না।