কলকাতা: বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় এ রাজ্যের ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্ব রেল যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতেই একথা জানানো হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রয়েছেন ১২ জন, পূর্ব বর্ধমানে ৮, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩, ঝাড়গ্রামে ২, হাওড়া ২, জলপাইগুড়ি ২, বীরভূম ১, দক্ষিণ দিনাজপুরে ১, মালদা ১, মুর্শিদাবাদ ২ জন। মৃতদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক বলে পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে। মৃতদের পরিবারের অধিকাংশেরই বক্তব্য নিজ নিজ জেলায় কাজ না পেয়েই বাড়ির লোকজন কাজের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন। কেউ চেন্নাইতে, কেউ ভেলোরে, কেউ ভুবনেশ্বরে কাজের খোঁজে যাচ্ছিলেন। আবার অনেকে ভিনরাজ্য থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন তাঁরা যে যাঁর কাজের জায়গায় ফিরে যাচ্ছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। কিন্তু এই দুর্ঘটনা তাঁদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, এর থেকেই বোঝা যায় রাজ্যে কর্মসংস্থানের কী হাল। রাজ্যে কাজের সুযোগ মিলছে না বলে দলে দলে বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন বয়সের লোকজন অন্য রাজ্যে চলে যান কাজ নিয়ে। কেউ জরির কাজ করেন, কেউ শোনার দোকানে কাজ করেন, আবার কেউ ধান রুইতেও যান বিভিন্ন রাজ্যে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্য সরকার দাবি করে, তারা নাকি কর্মসংস্থানের অনেক এগিয়ে। আজকের এই দুর্ঘটনায় এই রাজ্যের মৃতের তালিকাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, কর্মসংস্থানের কী হাল বাংলায়। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, এই রাজ্যে শিক্ষিত বেকার দের কাজ নেই বলেই তারা ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে চলে যান। ২০২০ সালে করোনার সময়ও বোঝা গিয়েছিল, কত বেকার যুবক ভিনরাজ্যে কাজ করতে যান।
আরও পড়ুন: Train Accident । করমন্ডল এক্সপ্রেস উসকে দিচ্ছে বিভীষিকাময় স্মৃতি, ভারতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা
বাংলায় যে কাজের অভাব তা স্বীকার করে নিয়েছে তৃণমূলও। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য অনিমেষ মণ্ডল বলেন, গত দেড় দুবছর ধরে গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় সরকার সেই টাকা আটকে রেখেছে। গ্রামের মানুষকে তো সংসার চালাতে হবে তাই এখানে কাজ না পেয়ে অনেকেই ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন।