দিল্লিতে জাতীয় রাজনীতির নয়া সমীকরণ। মঙ্গলবার থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক শুরু করেছেন একের পর এক বিরোধী নেতাদের সঙ্গে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমল নাথ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে বৈঠক করেন মমতার সঙ্গে। সূত্রের খবর, কমল নাথের মাধ্যমে কংগ্রেস সভানেত্রী মমতাকেই বিরোধী নেতৃত্বের সর্বসম্মত মুখ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। কংগ্রেস চায়, মমতাই বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তির প্রধান মুখ হয়ে উঠুক।
আরও পড়ুন: বুধবার বিকেলে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক মমতার
কমল নাথের পরেই মমতার সঙ্গে বৈঠক হয় রাজ্যসভার কংগ্রেস দলনেতা আনন্দ শর্মার। দুই কংগ্রেস নেতার সঙ্গে বৈঠকেই মমতার বক্তব্য, যত দ্রুত সম্ভব বিজেপি বিরোধী জোট বা ফ্রন্ট গঠনের কাজ সেরে ফেলতে হবে। জোটের নেতৃত্ব কে দেবেন, সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা হল, দেশের এখন বিজেপি বিরোধী হাওয়া। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এই হাওয়াকেই আগামিদিনে ঝড়ে পরিণত করতে হবে বলে মমতার মত।
বুধবার তৃণমূল নেত্রী বৈঠকে বসবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। সোনিয়া-মমতার বৈঠকেও বিরোধী নেতৃত্বের মুখের প্রসঙ্গ উঠতে পারে। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে সোনিয়াও একান্তভাবেই চান মমতাই বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিন। কংগ্রেস নেতৃত্বের পাশাপাশি চলতি দিল্লি সফরে অন্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। বুধবার এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ার কথা। তৃণমূল নেত্রী কথা বলবেন সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকে, আরজেডি নেতাদের সঙ্গেও।
আরও পড়ুন: I-PAC কাণ্ডে ত্রিপুরা যাচ্ছেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা কমল নাথের সঙ্গে মমতার আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। প্রথমত, কমল নাথ নেত্রীর বার্তা নিয়েই মমতার সঙ্গে কথা বলতে আসেন। দ্বিতীয়ত, পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে উঠে আসছে কমল নাথের নাম। এখনও কংগ্রেসের কোনও পূর্ণ সময়ের সভাপতি নেই। সোনিয়া কাজ চালাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে। তাঁর নিজের শরীরও ভালো নয়। রাহুল গান্ধী ফের সভাপতির দায়িত্ব নেবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আসে। এই অবস্থায় সোনিয়া কমল নাথের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। আগামিদিনে প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে মমতার অবশ্যই কংগ্রেসের সমর্থন প্রয়োজন। একই সঙ্গে ডিএমকে, আরজেডি, এনসিপিকেও পাশে পেতে হবে মমতাকে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় মঞ্চের ধাঁচে কোনও জোট তৈরি হতে পারে। যদিও তার অর্থ এই নয় যে, মমতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্যই আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আসলে তিনি চান বিজেপির বিরুদ্ধে একটি সুসংহত মঞ্চ বা জোট দ্রুত গড়ে উঠুক। দিল্লি সফরে তারই সলতে পাকাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী।