নারদ মামলায় আবারও মোড়। সোমবার রাতেই নিম্ন আদালতের জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সূত্রের খবর, নিম্ন আদালতে এই চার হেভিওয়েট নেতার জেল হেফাজতের আবেদন খারিজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিবিআইয়ের তরফে দিল্লি থেকে সলিসিটর জেনারেল কলকাতা হাই কোর্টের কাছে অনলাইনে আবেদন জানান। প্রধান বিচারপতি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিবিআইয়ের আবেদন শুনে আজ সোমবার নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্হগিতাদেশ জারি করেন। নিজের বাড়ি থেকে এই মামলা শুনে প্রধান বিচারপতি যে রায় দেন তাতে আজ ছাড়া পাচ্ছেন না ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। আজ তাঁদের মেডিক্যাল করিয়ে রাতে নিয়ে যাওয়া হবে প্রেসিডেন্সি জেলে। গভীর রাতের খবর তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে। কমান্ড হাসপাতাল থেকে ৫ জন ডাক্তারের দল তাঁদের পরীক্ষা করেন। পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার কথা হয় পিজির উডবার্ণ ওয়ার্ডে। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে উডবার্ণ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার খবর মেলে। কিন্তু গভীর রাতে তাঁদের প্রেসিডেন্সি জেলেই নিয়ে যাওয়ার খবর মেলে। ভোর রাতে অসুস্থ বোধ করলে মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায় কে পিজির উডবার্ণ ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়। সেখানে মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ভর্তি করা হয়। সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে ফের প্রেসিডেন্সি জেলেই ফেরৎ আনা হয়। সূত্রের খবর মদন মিত্রের শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
আসলে এদিন সকাল থেকেই সিবিআই এই চারজনকে নিয়ে মে টানাপোড়েন চালায় তা গভীর রাতেও অব্যাহত থাকে। নিজাম প্যালেসে আসেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী, ফিরহাদ হাকিমের দুই কন্যা, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁদের কাউকেই ভেতরে যেতে দেয়নি এখানে দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। পরে সবাই বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন।
আগামী বুধবার এই মামলার ফের শুনানি হবে হাই কোর্টে। ততদিন তাঁদের জেল হেফাজতেই থাকতে হবে। অপরদিকে, উচ্চ আদালতের এই রায় একতরফা বলে তৃণমূলের আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত জানিয়েছেন। তিনি বলেন পরবর্তী পদক্ষেপ দলের মতামত অনুসারে নেওয়া হবে। জানা গেছে এদিন কলকাতা হাই কোর্টে সিবিআইয়ের তরফে এদের জামিন বাতিলের আবেদনের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনের ৪০৭ ধারা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরে ভিন রাজ্যে মামলা স্থানান্তরের আবেদনও জানান হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার নামান্তর বলে অভিহিত করা হয়েছে। দলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপি নির্বাচনের হার মেনে নিতে না পেরে রাজ্যপালকে নিয়ে এই ধরণের নোংরা খেলায় মেতেছে। যদিও বিজেপির তরফে তাদের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। এখন দেখার এই চার শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের ঘটনার জল কোথায় গিয়ে শেষ হয়। সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।