দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই অহিংস আন্দোলনের নায়ক মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্রীকে হাজতবাসের সাজা শোনাল সে দেশের আদালত। আর্থিক দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে আশিসলতা রামগোবিনকে সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলো ডারবান হাইকোর্ট। অভিযুক্ত আশিসলতা বিখ্যাত মানবাধিকারকর্মী ইলা গান্ধীর মেয়ে।ইলা হলেন মনিলাল গান্ধীর মেয়ে অর্থাৎ গান্ধীজীর নাতনি। গান্ধীজীর দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন মনিলাল। ইলা গান্ধীজীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নন ভায়োলেন্স’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। পরিবেশ সুরক্ষা সামাজিক কল্যাণ এবং রাজনৈতিক সাম্যের হয়ে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইলা। তারই মেয়ে আশিসলতা আর্থিক দুর্নীতি ও জালিয়াতি কান্ডে জড়িয়ে পড়ায় সকলেই স্তম্ভিত।প্রসঙ্গত, ভারতবর্ষের বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা সহ ৬টি দেশে এই মুহূর্তে গান্ধীজীর ১৫৪ জন বংশধর বসবাস করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে প্রতিষ্ঠিত ‘নিউ আফ্রিকা অ্যালায়েন্স ফুটওয়ার ডিস্ট্রিবিউটর’ এর কর্ণধার এস আর মহারাজ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভারতে মেডিক্যাল সরঞ্জাম রফতানির নামে ৬২ লক্ষ টাকা ধার নেয় আশিসলতা। পরে জানা যায় পুরোটাই ভাঁওতা। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ব্যবসায়ী। ২০১৫ সালে প্রাথমিক শুনানির পর ৫০হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান আশিসলতা। কিন্তু পরে ফের তদন্ত শুরু করা হয়। গতকাল সোমবার সেই মামলার শুনানি পর্বে সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনায় ডারবান কোর্ট। মহারাজের অভিযোগ, আজ থেকে ছ’বছর আগে আশিসলতা জানান, তাঁর সংস্থা ‘নেটকেয়ার’ আফ্রিকার একটি হাসপাতালে তিনটে কন্টেনার ভর্তি লিনেনের কাপড় পাঠিয়েছে। কিন্তু কিছু আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে তাঁরা আমদানি শুল্ক দিতে পারছেন না। ফলে কাস্টমসও বন্দর থেকে মাল নামানোর অনুমতি দেয়নি। হাতে টাকা এলে আর এই সমস্যা থাকবে না। এরপরই তিনি জিনিস কেনার রসিদ, নেটকেয়ারের বিলের ফর্দ এবং ডেলিভারির কাগজ মহারাজের হাতে দেন। এমনকী সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হিসেবও প্রমাণ হিসেবে পাঠানো হয়। সবকিছু দেখে এবং আশিসলতার পারিবারিক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় থাকার ফলে ওই ব্যবসায়ী টাকা দিতে রাজি হন। চুক্তিতে সইও করে ফেলেন। কিন্তু কয়েকদিন পরেই এস আর মহারাজ জানতে পারেন, সমস্ত নথিপত্র ভুয়ো। এমনকী ‘নেটকেয়ারে’র সঙ্গে মাল কেনাবেচা নিয়ে আশিসলতা রামগোবিন এর নাকি কোনও কথাও হয়নি। এরপরই প্রতারণার অভিযোগে তিনি কোর্টের দ্বারস্থ হন।