Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: স্কিজোফ্রেনিয়া
সম্পাদক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ জুন, ২০২১, ১০:১৩:২১ পিএম
  • / ৫১৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে

তিনরকম দাম, কেন্দ্রের এক, রাজ্যের আরেক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য আরেক রকম দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ভ্যাক্সিনের, চলছিলেন নিজেদের ইচ্ছে খুশি মত, দেশের মুখ্যমন্ত্রীরা চিঠি লিখে বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনের দাবি তুলতে থাকে। ল্যাজে গোবরে সরকার সেই দাবি মেনে নিল, অজস্র মিথ্যে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, দাবি মেনে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে। এ নিয়ে কথা বলা যাবে, আপাতত দুটো খবর পাশাপাশি রাখা যাক, তারপর আজকের আলোচনা শুরু করা যাবে। প্রথম খবর হল, গত সপ্তাহে আমরা আমাদের দেশের প্রধান সেবককে ইনকরিজিবল নার্সিসিস্ট, প্যাথোলজিক্যাল লায়ার, আত্মরতিতে নিমগ্ন এক চরম মিথ্যেবাদী বলেছিলাম। ক’দিন পরেই অমর্ত্য সেন, দেশের সরকার, সরকারের মাথায় বসে থাকা মানুষকে স্কিজোফ্রেনিক বললেন, তিনি বললেন, “The government seemed much keener on ensuring credit for what it was doing rather than ensuring that pandemics do not spread in India. The result was a certain amount of schizophrenia,”

বললেন, ‘অতিমারি সংক্রমণ রোধ করার চেয়েও সরকার যেকোনও কাজের জন্য নিজের পিঠ চাপড়াতেই ব্যস্ত, এটা একধরণের স্কিজোফ্রেনিয়া,’

এদিকে অমিত শাহের বক্তব্য ছাপা হয়েছে, তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনেই বলেছেন,  “Jab corona ki doosri lahar aayi aur virus ne apna swaroop badal kar badi tezi se phailna shuru kiya — na keval tezi se phailna shuru kiya, iske saath-saath manav ki sehat par bhi bahut tezi se nuksan pahunchane ka iss baar uska lakshan dekha gaya — phir bhi iss ko bahut kam samay ke andar niyantrit kar ke dhalan ki aur le jaane mein hum sab ko ek samoohik safalta mili hai.

মানে অমিত শাহের কথামত, করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সামলে নেওয়া গেছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই এই সফলতা এলো।

গতকাল কোভিড – ১৯ কেড়েছে, ২৬৭৭ টি প্রাণ। সারা দেশের বহু অঞ্চলে টেস্ট নেই, চিকিৎসা নেই, মানুষ মারা গেলে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ব্রিজ থেকে ছুড়ে জলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, নদীর ধারে বালুচরে পুঁতে দেওয়া হচ্ছে। এসব ছবি আমাদের চোখের সামনে, সরকারের দু নম্বর মন্ত্রী অমিত শাহ, যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা করে দিলেন। অমর্ত্য সেন ঠিক এটাকেই অসুস্থতা বলেছেন। গাফিলতির ফলে দ্বিতীয় ওয়েভ হু হু করে ছড়ালো, ভ্যাক্সিনেশন নিয়ে যা চলছে তাকে ছেলেখেলা বলাই ভালো, কিন্তু তা নিয়ে একটা কথাও নেই। যুদ্ধ জয়ের বিউগল বাজানো হল, মহারাজের নামে জয়ধ্বনি দেওয়া শুরু হল।

করোনা সমস্যা? সে তো পৃথিবীজোড়া সমস্যা, সব দেশে হয়েছে, মানুষ মারা গেছে, শুরুতে তো বুঝেই উঠতে পারা যায়নি কী করে সামলাতে হবে? কেউ বলছিলেন এটা ঠান্ডা দেশে, মানে অপেক্ষাকৃত শীতল দেশে ছড়াবে, গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে ছড়াবে না। কেউ বলছিলেন এ অত্যন্ত সামান্য ফ্লুয়ের মত, হবে সেরে যাবে, কিছু বয়স্ক মানুষ মারা যাবে, কেউ বলছিলেন হার্ড ইমিউনিটির কথা, সব্বাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ুন, সব্বার করোনা হবে, সামান্য বয়স্ক কিছু লোক মারা যাবে, কিন্তু এক হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে, যা এই ভাইরাসকে থামিয়ে দেবে। কেউ বলছিলেন লকডাউন, কেউ বলছিলেন না। এই সহস্র মতামতের পর এখন কতগুলো সত্যি আমরা জেনেছি।

১) এই ভাইরাস গরম ঠান্ডা মেনে চলছে না। যে কোনও দেশেই ছড়াচ্ছে।

২) এরই মধ্যে এই ভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভ আমাদের প্রত্যেকের কোনও না কোনও প্রিয়জনকে কেড়েছে, এটার মারণ ক্ষমতা বয়স বিচার করছে না।

৩) ভ্যাক্সিন ছাড়া হার্ড ইমিউনিটি আশা করাও উচিত হবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাক্সিন দিতে হবে প্রত্যেক দেশবাসীকে। একমাত্র তাহলেই শারিরীক ও মানসিকভাবে এই ভাইরাসকে ঠেকানো যাবে।

ভারতবর্ষের জনসংখ্যা ১৩৫ কোটির কিছু বেশি, রবিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত দুটো ডোজ পেয়েছেন এমন নাগরিকের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৭ লক্ষ্য ৯৫ হাজার ৩৪ জন।  কেন্দ্র সরকারের তথ্য বলছে রাজ্য সরকারগুলোর হাতে এখনও ১ কোটি ৬৩ লক্ষের কিছু বেশি মানুষকে টিকা দেবার মত ওষুধ রয়েছে। তাদের যদি দেওয়া হয়ে যায় তাহলে মোট সংখ্যা দাঁড়ালো সাড়ে ৬কোটির মত কিছু মানুষ করোনার হাত থেকে বাঁচতে পারেন। তৃতীয় ওয়েভ আসবে, আসছে, বৈজ্ঞানিকরা জানাচ্ছেন, অমিত শাহ যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা দিলেন, অমর্ত্য সেন এটাকেই স্কিজোফ্রেনিয়া বলেছেন, আমরা বলেছি ইনকরিজিবল নার্সিসিস্ট, প্যাথোলজিক্যাল লায়ার।

এবারে আসুন দেখা যাক সমস্যাটা কোথায়? এটা ঘটনা যে এই করোনাতে এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর হারই যদি ধরা হয়, তাহলে তা খুব বড় কিছু নয়, তথ্য বলছে, এর থেকে ঢের বেশি মানুষ রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান, আরও অনেক অসুখ আছে, যা হলেও এর থেকে বেশি মানুষ মারা যান। তাহলে করোনার মৃত্যু নিয়ে এত চেল্লামেল্লি হচ্ছে কেন? তার কারণ হল, এটা এক সংক্রামক অসুখ, যে কারোর হতে পারে, যে কারোর। আপনার আমার, সবার। মানে দেশের প্রত্যেকটা মানুষই কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। রোড অ্যাক্সিডেন্ট কি সব্বার হওয়া সম্ভব? না সম্ভব নয়। অনেক অসুখ আছে যার মৃত্যু হার অনেক বেশি, সেটা কি সব্বার হওয়া সম্ভব? না সম্ভব নয়। অন্য দিকে অসুখ হলে কেবল শিশুরা মারা যাবে? কেবল বৃদ্ধরা মারা যাবেন? কেবল যুবকরা? এইখানেও করোনা এক ধাঁধা, আক্রান্ত হলে কে বাঁচবে, কে মরবে? কেউ জানে না। আর সেখানেই সমস্যা। ক্যান্সার হলে মানুষ মারা যায়, কিন্তু সব্বার ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা নেই, হাজার হাজার বাস ট্রাম ট্যাক্সি চলছে, সাধারণভাবে সব্বার অ্যাক্সিডেন্ট হবার সম্ভাবনা নেই। গাফিলতি, খামখেয়ালিপনা বা টেকনিক্যাল ফল্টের কারণে অ্যাক্সিডেন্ট হয়। কিন্তু করোনা সব্বার হতে পারে, হলে যে কেউ মরতে পারে। গাফিলতি ছাড়াও হতে পারে।  এই আতঙ্ক কিছু মানুষকে চূড়ান্ত সতর্ক করে তুলেছে, তাঁরা মাস্ক ছাড়া মানুষ দেখলে রেগে যাচ্ছেন, বহু মানুষ বুঝেছেন, সাবধানে থাকতে হবে, সরকার লকডাউন করছেন, খুলে দিলেও সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে তাও নয়। সিনেমা হল বন্ধ করেছিল সরকার, প্রথম ওয়েভের সময়। লকডাউন উঠে গেলো, মানুষ কিন্তু সিনেমা হলে গেলো না, যাবে না, কারণ সিনেমা দেখাটা জরুরি নয়, লকডাউন উঠে গেলো, কিন্তু ট্যুর অপারেটররা খদ্দের পেলেন? পেলেন না, কারণ বেড়াতে যাওয়াটা জরুরি নয়। রেস্তোরাঁ খুললো লকডাউনের পর কিন্তু মানুষ গেলেন না। এরকম আরও হাজারটা ব্যবসা ততদিন খুলবে না, যতদিন না মানুষের মন থেকে এই মৃত্যু আতঙ্ক দূর হচ্ছে। লকডাউনে বন্ধ, আতঙ্কে মানুষের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিক লেনদেন। ফলে জিডিপি নামছে, বেকারত্ব বাড়ছে, ৬৫ তে ভারত পাক যুদ্ধের সময় জিডিপি নেমেছিল মাইনাস ২.৬ % এর মত, ৮০ তে দুনিয়াজোড়া তেল ক্রাইসিস আর আমাদের দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে খরার জন্য জিডিপি মাইনাস ৫.৫ % এ। আর এই তৃতীয়বার জিডিপি বৃদ্ধি সঙ্কুচিত হল মাইনাস ৭.৩%। আর আমাদের দেশের ভয়ঙ্কর বৈষম্যকে মাথায় রাখুন, তাহলে বোঝা যাবে ৯০% গরীব মধ্যবিত্তকে ধরলে এই জিডিপি কোন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সমীক্ষা বলছে ৯৭% মানুষের রোজগার কমেছে এই অতিমারীর জন্য, লকডাউনের জন্য। ৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ নতুন করে দারিদ্র সীমার নীচে চলে গেছে এই সময়েই। আবার এই সময়েই ভারতে নতুন করে ৪০ জন বিলিওনিয়ার তৈরি হল, মুকেশ আম্বানি ৮৩ বিলিয়ন ইউ এস ডলারের মালিক হলেন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন যুদ্ধ জয় হয়ে গেছে, অমর্ত্য সেন একেই বলছেন স্কিজোফ্রেনিক।

ক্ষতি কেবল এখনই মাপা যাচ্ছে তা নয়, আরও বিরাট ক্ষতি বসে আছে আমাদের জন্য। ধরুন বহু ছোট শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে, শ্রমিক বেকার ইত্যাদি তো আছেই। সেই শিল্পপতিরা লক্ষ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিলেন, সেই ঋণ আর ক’দিন বাদেই অনাদায়ী ঘোষণা হবে, লিমিটেড লায়াবিলিটির কোম্পানিতে কাউকে ধরা যাবে না, প্রত্যেকের কাছে প্যান্ডেমিএর জোরালো অজুহাত তো থাকবেই। সেই সব কোম্পানির স্থাবর অস্থাবর সম্পদ হাতবদল হচ্ছে, কোটি কোটি টাকার ঋণের বোঝা চাপবে মানুষের ওপর। অন্যদিকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকান, সেখানে গবেষণা বন্ধ, কারিগরি শিক্ষা অনলাইনে চলছে, সেখানে যে কি হচ্ছে তা জানা নেই কারোর, শিশুদের দিকে তাকান অন্তত একটা বিরাট সংখ্যক শিশু স্কুল, দিদিমণি, ব্ল্যাকবোর্ড দেখতেই পেল না, শহরে বাচ্চারা মোবাইল আর ট্যাবে ক্লাস করছে, গ্রামে মিড ডে মিলও সবাই পাচ্ছে না। ক্লাসে তুলে দেওয়া হবে সব্বাইকে। তারপর? ছেলেটা ক্লাস ফোরে গিয়ে বুঝবে সে কিছুই জানে না, স্কুল ছেড়ে দেবে, ড্রপ আউটের সংখ্যা বাড়বে, এবং হ্যাঁ এগুলো ভবিষ্যতে হবে। তার সামাল দেওয়ার জন্য সরকার কিছু করছে? না, দৃশ্যতই কিছুই করছে না। এদিকে এই ভ্যাক্সিনেশন কবে শেষ হবে? আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছু বলেছেন? হ্যাঁ বলেছেন, মোদীজির নেতৃত্বে যুদ্ধ জয় হয়েছে বলেছেন, অমর্ত্য সেন বলেছেন স্কিজোফ্রেনিয়া।

 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

কংগ্রেস নেতা শ্যাম পিত্রোদার মন্তব্যের কড়া জবাব বাংলা থেকেও
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
ভাটপাড়ায় আক্রান্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে অর্জুন সিং
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
উন্নতির যোগ আছে এইসব রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
অভিষেকের সভা থেকে ফিরে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত প্রাক্তন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এর উৎকর্ষ কেন্দ্র চালু আইইএম-এর
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
রাজারামের নজরে ছিল ভিক্টোরিয়া, হাওড়া ব্রিজও, দাবি পুলিশের
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
জন্মদিনে স্মৃতিচারণায় ‘শচীন’
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
নির্বাচনী সভায় ভাষণ দেওয়ার সময় অজ্ঞান হয়ে গেলেন নীতিন গড়করি
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
দু’ দেশের পতাকা হাতে ভারত-পাক মৈত্রীর বার্তা দিলেন পাকিস্তানি অ্যাথলিট
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
বিজেপির ১০ শীর্ষ নেতা তৃণমূলে আসার অপেক্ষায়, দাবি অভিষেকের
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয় দফার আগেই রাজ্যে আরও ৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে মনোনয়ন জমা দিলেন দিলীপ
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
বিশ্বকাপের দলে হার্দিককে রাখলেন না বীরু
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
কেষ্ট মাটির ছেলে, আউশগ্রামের সভায় সার্টিফিকেট মমতার
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও বিতর্কে জড়ালেন অধীর
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team