কলকাতা: তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বে মঙ্গলবার কিছুটা জল ঢেলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু সেই দ্বন্দ্ব ধামাচাপা পড়ল না। এদিন প্রবীণ সাংসদকে বিঁধলেন আর এক প্রবীণ বিধায়ক এবং বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায় (Tapas Roy)। সুদীপকে অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাপস বলেন, উনি ছয় বছর দল থেকে সাসপেন্ড ছিলেন। তখন তো বলেছিলেন, তৃণমূল দলটা ছয় বছরও থাকবে না। স্বামী-স্ত্রী মিলে তখন অনেক কিছু বলেছিলেন। প্রসঙ্গত, সুদীপের সঙ্গে তাপসের বিরোধ বহু পুরনো। এর আগেও তাপস-সুদীপ বিরোধ একাধিকবার প্রকাশ্য এসেছিল। সেই বিরোধের কারণেই তাপসকে উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতির পদও খোয়াতে হয়েছিল।
সোমবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক সভায় সুদীপ মন্তব্য করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) না থাকলে জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের হাল ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতো হয়ে যাবে। গতকালই সুদীপ চলে যাওয়ার পর ওই মঞ্চ থেকেই তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, সুদীপদা থাকলে তাঁর মন্তব্যের ভাব সম্প্রসারণ করে দেখিয়ে দিতাম।
আরও পড়ুন: নদিয়ায় জাল নোটের রমরমা কারবার
মঙ্গলবার তাপস সাংসদকে কটাক্ষ করে বলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Sudip Banerjee) মতো একজন জাতীয় স্তরের নেতা থাকতে তৃণমূলের এমন দশা হবে কেন। ওঁর তো বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না মানে কী। উনি নিজে মমতার থেকে দশ বছরের বড়। আমাদের সবার আয়ু নিয়ে মমতা বহুদিন বাঁচুন, আমাদের নেতৃত্ব দিন। তাপস বলেন, মমতা না থাকলে সুদীপের এমন হাল হতে পারে। আসলে নিরাপত্তা বা বয়সের কারণে কম কথা বলা দরকার। এই নেতারা কথা বলতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। আশা করি, এর পর থেকে এঁরা কম কথা বলবেন। তাপসের মন্তব্য, আসল কথা হচ্ছে, এঁরা কখনও দল করেননি, সংগঠন করেননি। চাটুকারিতাকে এঁরা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন।
বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক বলেন, সুদীপের মতো জাতীয় স্তরের নেতারা এইভাবে বলছেন বলেই তার জবাব দিতে হচ্ছে। তাঁদের দায়বদ্ধতা এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অনেকে বলছে, এটা নাটক। আমি নাটক কি না, বলতে পারব না। তবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যে বড় অভিনেতা, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ভালো সিনেমা করলে দাদাসাহেব ফালকে রাখা ছিল। অস্কার পেতেন কি না, জানি না।
আরও অন্য খবর দেখুন