ওয়েবডেস্ক- সোমবার রাত থেকে ভয়াবহ (Natural Disaster) প্রকৃতির রুদ্ররোষে বিপর্যস্ত কলকাতার (Kolkata Water Logged) রাজপথ। পুজোর আবহ মলিন। সোমবার রাত থেকে প্রকৃতির তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ১০ জনের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণহানি হয়েছে। শোকস্তব্ধদের পাশে রয়েছে রাজ্য।
এত ভয়াবহ প্রকৃতির রূপ এর আগে দেখেনি বাংলা। এখনও পর্যন্ত বিধবংসী ঝড়গুলির(Devastating Storm ) মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল আমফান। সেই ভয়াবহতাকেও ছাপিয়ে গেল সোমবার রাতে প্রায় পাঁচঘণ্টা ধরে একনাগাড়ে চলা মুষুলধারে বৃষ্টি। সোমবারের সেই চিহ্ন গোটা কলকাতাজুড়ে। কোথাও গাছ পড়েছে, গাড়িগুলি একটু মাথা বের করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেইসঙ্গে অফিসযাত্রীরা নাকাল হয়েছে রাস্তায়। কারণ যানবাহনের কোনও পরিষেবা নেই। বাস হাতে গোনা মাত্র, বিপর্যস্ত ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা। এই অবস্থায় আগামীকাল কেমন থাকবে আবহাওয়া। একই রকম দুর্যোগ চলবে, নাকি মিলবে রেহাই।
নিম্নচাপের ভ্রুকুটি রয়েছেই। সেটি বুধবার রাতের ঝাড়খণ্ড পার করে ছত্তিশগড়ে প্রবেশ করবে। এর ফলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখা উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে প্রায় ১৬ ঘণ্টা বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলে উত্তাল হবে সমুদ্র। বুধবার বিকেল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কিন্তু কী হবে আগামীকাল? মঙ্গলবার বিকেলে আগামী ২৪ ঘণ্টার আপডেট দিল আবহাওয়া দফতর। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই আশ্বাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে বৃষ্টির থেকে রেহাই মিলবে না এখনই। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতার আকাশ মেঘলা থাকবে। কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। সেই সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া।
বুধবার পশ্চিমের চার জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। গাঙ্গেয় এবং পশ্চিমের কিছু জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃহস্পতিবারেও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। শক্রবারেও একই অবস্থা। ফের শনি ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বাড়তে বৃষ্টির পরিমাণ।
অপরদিকে উত্তরবঙ্গের সব জেলাগুলিতে বুধবার থেকে টানা সোমবার পর্যন্ত ভারী থেকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং জেলায়। সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে।
বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার উত্তরবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস। ফের সোমবার দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আরও পড়ুন- কলকাতায় মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে? যা জানাল আবহাওয়া দফতর
প্রথমত, কলকাতার এই বৃষ্টিকে মেঘভাঙা (Cloud Brust) বৃষ্টির তকমা দিতে চায়নি আবহাওয়া দফতর (Alipur Weather Office) । একে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলে না, তবে আরেকটু দুর্যোগ ঘনালেই তাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলা যেতে পারত। এক ঘণ্টায় ২ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হলেই এই প্রবল বর্ষণকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলা যেত। তবে সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে তাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলা হয়। কলকাতায় রাত ৩টে থেকে ভোর ৪টের মধ্যে, এক ঘণ্টায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ, আর ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেই ভূগোলের পরিভাষায় এটিকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলা যেত। গত ২৪ ঘণ্টায় তিলোত্তমায় ২৫১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাত আড়াইটে থেকে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১৮৫.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
দেখুন আরও খবর-