কলকাতা : ‘রঘু ডাকাত’-এর কায়দায় খোদ পুলিশকর্মীকে ফোনে হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিল দুষ্কৃতীরা। বাংলার সেই রঘু ডাকাতের কাহিনী মনে আছে তো? ঐতিহাসিক রুদ্ধশ্বাস সেই ডাকাতির কাহিনী। বাংলার জমিদারদের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দিয়ে ডাকাতি করতে আসত রঘু ডাকাত। আর অসহায় জমিদাররা নিজেদের লেঠেল দিয়ে বাড়ি ঘিরে রাখত। জঙ্গলে ডাকাতে কালীকে পুজো দিয়ে জমিদার বাড়িতে ডাকাতির জন্য হানা দিত দুর্ধর্ষ ডাকাতের দল। এখন দিনকাল বদলেছে। চিঠি লেখার পাট চুকেছে। তাই এবার রঘু ডাকাতদের কায়দায় ফোন করে হুমকি দিয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিল দুষ্কৃতীরা। তাদের দুঃসাহস দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশকর্মীর নাম কবীর মণ্ডল। তিনি দক্ষিণ কলকাতার লেক থানার কনস্টেবল। শুক্রবার তিনি ডিউটি করছিলেন থানায়। সেই সময় একটি অচেনা নম্বর থেকে তার মোবাইলে ফোন আসে। তাতেই হুমকি দিয়ে বলা হয়, “তোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে যা টাকা আছে আমরা সব তুলে নিচ্ছি। ক্ষমতা থাকে আটকা।” এর পরেই উচ্চস্বরে হাসতে থাকে দুষ্কৃতীরা। কবীর মণ্ডল প্রথমে একটু ঘাবড়ে যান। এরপর তিনিও পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন,”আমি একজন কলকাতা পুলিশের কর্মী। তোমরা কার সঙ্গে ইয়ার্কি মারছো তা এবার টের পাবে।”এই কথা শুনে খিলখিল করে হাসতে হাসতে দুষ্কৃতীরা ফোন কেটে দেয়। কোন নম্বর থেকে ফোন এসেছে তার খোঁজ করতে শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন : খাস কলকাতায় ই-সিমের ফাঁদ পেতে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতি
এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি দেখেন, নিজের মোবাইলে পরপর মেসেজ ঢুকছে। সেই মেসেজে দেখানো হয়েছে ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য। তখন কবীর মণ্ডল আরও ঘাবড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি জানান খিদিরপুরের নিজের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে। তদন্তে নামে লেক থানার পুলিশ। তদন্তে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি শাখার গোয়েন্দারা। দেখা যায়, ওই দিনই কবীর মধ্য কলকাতার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তুলে ছিলেন। সেখানেই তার এটিএম কার্ড ক্লোন করে স্কিমারের মাধ্যমে সব তথ্য পেয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এর পরেই ব্যাঙ্ক থেকে সব টাকা তুলে নেয় তারা। এটিএম কাউন্টারের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে গোয়েন্দারা।