ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে রাজ্যের অধিকাংশ পানশালা। তবে এবার কোভিডের জন্য নয়, বরং তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মানছে না রাজ্য সরকার। এরই প্রতিবাদে পানশালা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিল পশ্চিমবঙ্গ হোটেল ও বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
পশ্চিমবঙ্গের হোটেল এবং বারের ব্যবসা মূলত রাত বাড়লেই বাড়ে। বারের সঙ্গে লাগোয়া রেস্তোরাঁগুলোতে রাত ৯টার পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। তা সে শহরে হোক কিংবা শহরাঞ্চলে বাইরে, সর্বত্রই এই একই চিত্র। অথচ করোনা পরিস্থিতি চলাকালীন গত দু’বছর ধরে হোটেল এবং বারগুলি অধিকাংশ সময়ই বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই হোটেল ও বারগুলি যখন খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তখন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা হবে এই নির্দেশিকা চালু রয়েছে। অথচ এই সময়ের মধ্যে পানশালামুখী হতে চান না কেউই। তাই বিপুল অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে হোটেল ও পানশালার মালিকদের।
আরও পড়ুন : পার্ক হোটেল ও এইচএইচআই-য়ে মদ পরিবেশনে নিষেধাজ্ঞা
একাধিকবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও সরকার থেকে সাহায্য মেলেনি এমনটাই দাবি বার কর্মীদের। আংশিক লকডাউনের মধ্যে বার চালু করার যে সময়সীমা সরকারি তরফ থেকে ধার্য হয়েছে বিকেল ৫ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত, তাতে সেই অর্থে ব্যবসা চালানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। কর্মচারীদের জন্য বেতন দিতে হচ্ছে। মূলত যে অভিযোগ সময়সীমা কম থাকলেও সরকার বার কর্মীদের থেকে পূর্ণ কর জমা নিচ্ছে
গতবছরও সরকারকে পুরো কর জমা দিতে হয়েছে বার কর্মী ও মালিকদের। অভিযোগ, পুরো কর জমা নিলে কেন পূর্ণ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না? সারাদিন সরকারি বেসরকারি সব অফিস চালু থাকছে পূর্ণ সময়ের জন্য। এখনও অধিকাংশ জেলায় বার খোলার অনুমতি মেলেনি। কিন্তু সরকার হোটেল এবং বারগুলি কাছ থেকে পুরোদমে কর নিয়ে চলেছে।
আরও পড়ুন : বকেয়া কর জমা দিলে তবেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, তৃণমূলের তিন পঞ্চায়েতে ধুন্ধুমার
বারে যে বার সিঙ্গার বা ডান্সাররা পারফর্ম করেন, তাঁদের থেকেও নির্ধারিত সময়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা। অফিস পর বারে আসবার সময় বার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সিঙ্গার বা ডান্সাররা টাকা রোজগার করতে পারছেন না। এমন লক্ষাধিক সিঙ্গার ও ডান্সাররা আজ চরম আর্থিক সংকটের সম্মুখীন। বাগুইআটি এলাকায় বিগত ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন পানশালা। তাতেও চূড়ান্ত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের। বুধবার শহর এবং শহরতলীর বারকর্মীরা একত্রে শামিল হয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে তাঁদের পক্ষে আর হোটেল বা পানশালা চালানো সম্ভব হবে না। তাই তাদের দাবি মত সময়সীমা বাড়ানো না হলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবে বার মালিকরা। এমনকি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে সব পানশালা বলে হুঁশিয়ারিও দিলেন পশ্চিমবঙ্গ হোটেল ও বার অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র অচিন্ত্য বসু। শুধু সময়সীমা বাড়ানোই নয়, নির্দিষ্ট সময়ের থেকে যদি কিছুটা সময় বেশি পানশালা খোলা থাকে, তাহলেই পুলিশের ধরপাকড়ের মুখেও পড়তে হচ্ছে। যার ফলে রীতিমতো সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে বলে জানালেন পানশালার শিল্পী বিপাশা চৌধুরী। নির্দিষ্ট আই কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁদের থেকে নেওয়া হচ্ছে টাকা এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন বারের শিল্পীরা।