কলকাতা: ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু হত্যা মামলার (Jhala Congress Councilor Murder Case) তদন্তের ভার সিবিআইকে (CBI) দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার রাজ্য পুলিসের হাতে থাকা সব নথি অবিলম্বে সিবিআইকে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ৪৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রাথমিক রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। অভিযোগকারী এবং মানুষের মনে আস্থা ফেরানোর জন্যই এই নির্দেশ বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
রবিবার পর্যন্ত পুলিস তপন কান্দু হত্যা মামলায় নিহত কাউন্সিলরের দাদা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান (Jhalda Councillor Murder Claim Purulia District Police) জানিয়েছেন, কাউন্সিলর তপন কান্দুকে খুনের পিছনে রয়েছেন দাদা নরেন কান্দু। তিনিই এই খুনের মূল ষড়যন্ত্রী। খুনের জন্য সুপারি কিলারকে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও এই খুনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেন পুলিস সুপার।
রাজ্য পুলিসের উপর আস্থা রাখতে না-পেরে সিবিআই তদন্ত চেয়ে শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর (Tapan Kandu) স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তাঁর অভিযোগ, গত ১১ মার্চ রাতে স্বামীকে ঝালদা থানার আইসি তুলে নিয়ে যান৷ থানায় বসিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে হুমকি দেন৷ স্বামী তৃণমূলে যোগ দিতে চাননি৷ এ কারণেই তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে নিহতের স্ত্রীর দাবি৷ পূর্ণিমা ঝালদা থানার আইসির শাস্তির দাবি করেন৷ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের খুঁজে বের করে যথাযোগ্য শাস্তির চান তিনি।
আরও পড়ুন- Tribal Shikar Utsav: পুলিস-বনকর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে রাতভর শিকার উৎসব সেরে জঙ্গল ছাড়লেন আদিবাসীরা
সোমবার এই গোটা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে আদালত জানায়, পুলিসি তদন্তে কিছু কিছু খামতি অবশ্যই আছে। প্রথমত: ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফি হয়নি। ঝাড়খণ্ড ধৃত কলেবর সিংকে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। আইসি সঞ্জীব ঘোষকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি, তিনি এখনও কর্মরত। সঞ্জীব ঘোষের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। সব দিক বিবেচনা করেই সোমবার সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়।
কান্দু পরিবারের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি সোমবার বলেন, সিটের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই রবিবার জেলার পুলিশ সুপার আইসি সঞ্জীব ঘোষকে ক্লিনচিট দিয়ে দিলেন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই পুলিস ঘটনাটিকে পারিবারিক বিবাদ বলে মূল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ এই পুলিস সুপারকেই কয়লা পাচার মামলায় ইডি ডেকে পাঠিয়েছিল।
১৩ মার্চ সন্ধেয় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। বিকেলে হাঁটার সময় ঝালদা-বাগমুন্ডি রোডের উপরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গোকুলনগর গ্রামের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা একটি বাইকে আসা ৩ জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য গুলি করে। তাঁর পেটে গুলি লাগে। রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তপন। এরপর দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় ছিল কংগ্রেস এবং তপন কান্দুর পরিবার।