কলকাতা: ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ৪টে ২৫। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পৌঁছল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নশ্বর দেহ। তিল ধারনের জায়গা নেই গোটা চত্বরে। গান স্যালুটে সম্মান জানালো হল রাজ্যের প্রাক্তন পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে। তার পর চিরবিদায়…
শুধুমাত্র একটা মানুষের মৃত্যু নয়। এ যেন একটা যুগের অবসান। সত্তর দশকের যারা চুটিয়ে রাজনীতি করেছেন তাঁদের অনেকেই বিদায় নিয়েছেন। সেই তালিকা দীর্ঘ- শ্যামল চক্রবর্তী, গনিখান চৌধুরী, প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী, সোমেন মিত্র। এ বার সেই তালিকায় নাম লেখালেন সুব্রত।
আরও পড়ুন: কেমন ছিলেন ব্যক্তি সুব্রত? স্মৃতিচারণায় শাসক থেকে বিরোধীরা
শুক্রবার সকাল থেকেই রবীন্দ্র ভবনে ভিড় জমিয়েছিলেন সুব্রতর অনুরাগীরা। সকাল ১০টার সময় পিস ওয়ার্ল্ড থেকে রবীন্দ্র সদনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দেহ। বাম-ডান শিবিরের নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অগণিত সাধারণ মানুষ। কোভিড মেনে শ্রদ্ধা জানান সকলে।
বিধানসভায় শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিধায়করা
দুপুর ২টো অবধি রবীন্দ্র সদনেই শায়িত ছিল সুব্রতর দেহ। এর পর বিধানসভায় নিয়ে যাওয়া হয় সুব্রতকে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের মুখ্য সচেতক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বিধায়করা তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। বিজেপি বিধায়করাও উপস্থিত ছিলেন।
সকাল থেকেই ভিড় জমেছিল সুব্রতর গড়িয়াহাটের বাড়ির সামনে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভিড়ও বাড়তে থাকে। ৩টে নাগাদ বাসভবনে নিয়ে আসা হয় সুব্রতর দেহ। এর পর একডালিয়া এভারগ্রিনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ক্লাব অন্তঃপ্রাণ ‘দাদা’ যে আর নেই, তা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না অনেকে।
আরও পড়ুনঃ ‘সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়’, মন্ত্রীর শেষ যাত্রায় থাকবেন না মমতা
ক্লাবের কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা জানানোর পর সুব্রতর দেহ কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশে রওনা দেয় প্রাক্তন পঞ্চায়েত মন্ত্রীর নশ্বর দেহ। সুব্রত মুখার্জি অমর রহে লেখা ব্যানার নিয়ে শেষযাত্রায় সামিল হন হাজার হাজার মানুষ। মিছিলের ভিড়ই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, ঠিক কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
কেওড়াতলা মহাশ্মশানের পথে সুব্রত
দিল্লির ফোন পেয়ে এক লড়াকু নেত্রীর নাম বলেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেটা ১৯৮৪ সাল। হয়তো সেই সময়ই সুব্রত দেখতে পেয়েছিলেন ভবিষ্যতকে। সেই নেত্রী আর কেউ নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ছাড়িয়ে বিভিন্ন রাজ্যে পা বাড়াচ্ছে তৃণমূল। বোনের এই লড়াইটার সাক্ষী থাকতে পারলেন না ‘দাদা’ সুব্রত।
কেওড়াতলায় গান স্যালুট