কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির চার সদস্যের সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার ব্যাপারে স্থগিতাদেশ মিলল না। সোমবার ওই চার সদস্যকে বেলা দুটোর মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতেই হচ্ছে। উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এদিন। প্রধান বিচারপতি জানান, নিয়ম অনুযায়ী তিনি নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করবেন।
এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি এবং নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। সে ব্যাপারে একাধিক মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। ২০১৯ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য রাজ্য সরকার পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির মাথায় বসানো হয়েছিল কমিশনের উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে। কমিটির বাকি চার সদস্য তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব এস আচার্য, পার্থবাবুর ওএসডি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর একে সরকার এবং শিক্ষা দফতরের ল’অফিসার টি পাঁজা।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ওই কমিটিও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত। শুধু তাই নয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক এর রায়ে কমিশনের উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদকে নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের কিংপিন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি পাঁচ সদস্যকেই সিবিআইয়ের কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে পাঁচজনই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন। এর আগে ডিভিশন বেঞ্চ একাধিকবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। তাতে ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করেন। প্রশ্ন তোলা হয়, বারবার কেন ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিচ্ছে সিবিআই অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে। তিনি এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আরও পড়ুন: Aliah University: ধৃত ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিনকে বারাসত আদালতে পেশ
উপদেষ্টা কমিটির পাঁচ সদস্য ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন একক বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে। সোমবার হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ স্কুল সার্ভিস কমিশনের সমস্ত মামলা থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি চায়। কমিটির পাঁচ সদস্য প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধান বিচারপতি জানান, প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী তিনি নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। তাঁদের জরুরি শুনানির বিষয়টি মাথায় রাখা হবে। তবে তিনি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের উপর কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেননি। এর অর্থ হল, কমিটির চার সদস্যকে এদিন সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতেই হবে। একক বেঞ্চ বলেছে, কমিটির চার সদস্যকে সিবিআই দফতরে হাজিরার বিষয়টি কলকাতা পুলিস এবং বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে সুনিশ্চিত করতে হবে।