কলকাতা: কসবা কাণ্ডের (Kasba Incident) জের, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ (South Calcutta Law College)। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিল গর্ভনিং বডি। ইতিমধ্যেই ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কলেজের বর্তমান ছাত্রছাত্রীরাও বিক্ষোভ মিছিল করছেন। তাঁদের দাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কসবা থানা থেকে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ পর্যন্ত হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেন তাঁরা। কলেজের পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কলেজের পড়ুয়ারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ক্যাম্পাসে জমায়েত করেছেন। কিন্তু উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে অভিযোগ। তাঁরা উপাচার্যকে দেওয়ার জন্য একটি ডেপুটেশন তৈরি করেছেন।
গত শুক্রবার কসবা ল’ কলেজের গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। গত বুধবারের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত TMCP নেতা মনোজিৎ মিশ্র-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশপাশি ঘটনার দিনের কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। নির্যাতিতা তরুণীর গোপন বয়ানও নিয়েছে পুলিশ। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্তু পুলিশি তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’-এর পাঁচজন সদস্য কাজ শুরু করেন। এদিন ‘সিট’-এর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন ন’জন ‘সিট’ সদস্য তদন্ত করছেন। নির্যাতিতা ছাত্রী ও তিন অভিযুক্তর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ২৫ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছেন তদন্তকারীরা। তালিকায় ছাত্রী, প্রাক্তনী, নিরাপত্তারক্ষী-সহ আরও কয়েক জন আছেন। এখনও অবধি ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুন: কসবা কাণ্ডের তদন্তে শহরে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম
সোমবার নিরাপত্তার দাবিতে কলেজে এসেছিলেন একদল পড়ুয়া। তাঁরা জানান, প্রথমবর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে কলেজে যা ঘটেছে, এর পরে আতঙ্কে রয়েছেন বাকিরা। ভাইস প্রিন্সিপালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনও জবাব আসেনি। এ দিন ডেপুটেশন দিতে এসে এই নোটিস দেখে নতুন চিন্তা, মাঝপথে কি পড়াশোনাও বন্ধ করে দিতে হবে? এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। পড়ুয়াদের দাবি, অতীতেও একাধিক মহিলার সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেছেন। মেয়েদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সেক্রেটারি পদের লোভ দেখিয়ে অনেক মেয়েকেই ‘টোপ’ দিতেন অভিযুক্ত। এ ক্ষেত্রেই সেটাই করেছিলেন। এদিকে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকছে কসবার আইন কলেজ। কলেজের ওয়েবসাইটে সে সংক্রান্ত নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আপাতত গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত সমস্ত বিএ.এলএলবি ও এলএল.এম ক্লাস বন্ধ থাকবে। কলেজ চত্বরে কোনও পড়ুয়া প্রবেশ করতে পারবেন না। পরবর্তী নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কলেজ। এই নোটিসে কপালে হাত কলেজ পড়ুয়াদের।
দেখুন ভিডিও