কলকাতা: আপনাদের লজ্জিত হওয়া উচিত, কারণ বিষয়টি এক তরুণীর শালীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত। শর্মিষ্ঠা পানোলি (Sharmishtha Panoli) মামলায় পুলিশকে ভর্ৎসনা করে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। যেভাবে শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্তব্য বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের। শর্মিষ্ঠাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে, তবে আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
কেস ডায়েরি থেকে কলকাতা পুলিশকে (Kolkata Police) এফআইআর দেখানোর নির্দেশ। মামলাটি গ্রীষ্মকালীন বেঞ্চের পরিবর্তে নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে তখনই এফআইআর দেখানোর নির্দেশ। অভিযুক্তকে নোটিস দেওয়ার সময় বাড়িতে না পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ এফআইআর অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। এক্ষেত্রে যাবতীয় আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। যখন তাকে পাওয়া যায়নি, তখন পরোয়ানা জারিও করা হয়। জানায় পুলিশ।
পরোয়ানা জারি করার সূত্রেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, গ্রেফতারির কারণটা জানান। শুধু ওয়ারেন্ট জারির প্রেক্ষিতে গ্রেফতার? সেটাই কি যথেষ্ট?
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে প্রবল ঝড়, সঙ্গে ভারী বৃষ্টি, ভিজবে কোন কোন জেলা?
আদালতের এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করা হয়। তার উত্তরে বিচারপতি বলেন, ঠিক আছে দেখছি। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে ডায়েরির বিষয়বস্তু শর্মিষ্ঠার জানার দরকার নেই। কিন্তু গ্রেফতারের কারণ জানাটা তাঁর দরকার এবং এই আদালতে রাজ্যকে তার প্রমাণ দিতে হবে।
শর্মিষ্ঠার আইনজীবী ডিপি সিং-এর সওয়াল, শর্মিষ্ঠার গ্রেফতারি সম্পূর্ণ বেআইনি। একদিন পরেই এই ভিডিওটি মুছে দেওয়া হয়। ভিডিওর মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের প্রতি। সেখানে অসতর্ক কিছু শব্দ প্রয়োগ হয়েছে। অথচ তার জেরে অভিযুক্তকে লাগাতার হুমকি শুনতে হয়েছে ও হচ্ছে। তার ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
বিচারপতির মন্তব্য, শর্মিষ্ঠার অভিযোগের ভিত্তিতে কাদের গ্রেফতার করা হয়েছে? কারণ বিষয়টি এক তরুণীর মর্যাদা সম্পর্কিত। এসবের জন্য আপনাদের লজ্জিত থাকা উচিত। আমি এটা প্রকাশ্যে বলতে বাধ্য হচ্ছি। আর যাই হোক, তিনি একজন আইনের ছাত্রী।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার হাইকোর্টে শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ হয়। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ সেখানে চ্যালেঞ্জ করা হয়। কিন্তু ওই আবেদন জরুরি নয় বলে উল্লেখ করে বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় জানান, হেভেন্স উইল নট ফল ইন টুডেস (দুদিনের মধ্যে আকাশ ভেঙে পড়বে না)।
দেখুন খবর: