কলকাতা : একটা সময় পটচিত্রে বাংলার জুড়ি মেলা ভার ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে হারিয়েছে সেই সৃষ্টি। প্রাচীন সেই সৃষ্টিকেই বাঁচিয়ে তোলার এক প্রয়াস। নানা রঙের ব্যবহারে বাক্সের উপর আঁকা হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশের ছবি। দেবদেবীর সঙ্গে বাদ যাচ্ছেন না তাঁদের বাহনরাও। নিপুণ হাতে বাক্সের উপরেই সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ছবি। পট আঁকার জন্য কাপড় নয় , ব্যবহার হচ্ছে ফেলে দেওয়া বাক্স। পাড়ার আট থেকে আশি সকলেই পালা করে আঁকছেন ছবি।
অনেক পুজোই আজ হারিয়েছে নিজেদের জৌলুস। সেরকমই মহেশতলার এসএম নগর হাউসিং এসটেট। তবে এবার সংঘবদ্ধভাবে সব আবাসিকরাই উঠে পড়ে লেগেছে নিজেদের পুজোকে ফিরিয়ে আনতে নতুন ছন্দে। এবারের পুজোর থিম নিজের হাতেই তুলে নিয়েছেন তারা। প্রিয়াঙ্কা জানার তত্ত্বাবধানে আবাসনের মহিলা এবং বাচ্চারা হাত লাগাল থিম তৈরি করতে। কোভিড প্রটোকল মিনিং ক্লাব ঘরেই হচ্ছে ওয়ার্কশপ। আবাসন জুড়ে এখন যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি।
আরও পড়ুন : অষ্টমীর পুজোয় বিরাটদের নতুন জামা
কেউ নিজের সংসারের কাজ তড়িঘড়ি সামলে ছুটছেন ক্লাবে আবার কেউ কেউ নিজের পড়াশোনার কাজ ঝটপট সেরেই দৌড়চ্ছেন সেদিকে।করোনাকালে অনলাইন শপিংয়ের বাড়বাড়ন্ত। সেই সঙ্গেই বাড়িতে আসছে হরেক রকম বাক্স। জিনিসপত্র নেওয়ার পর যে বাক্সকে আমরা ফেলে দিই, সেই বাক্সকেই হাতিয়ার করে নিয়েছেন সকলে। কাগজের বাক্সগুলো ফেলে না দিয়ে রিসাইকেলের মাধ্যমে মণ্ডপসজ্জার কাজে লাগানো হচ্ছে। আর সেই বাক্সগুলোয় নতুন রূপ দিচ্ছেন আবাসনের মহিলা এবং বাচ্চারা। পটচিত্রের মাধ্যমে সুন্দর করে সেজে উঠছে এক একটা বাক্স। কোনও বাক্সে দুর্গা, তো কোথাও পদ্মফুল, কোথাও আবার সিংহ সবই থাকছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, আগে কাপড়ের উপর কাদা, আঠা লেপে শোকানোর পর প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে পটচিত্র আঁকা হত। বাংলার এই অসাধারণ শিল্প এখন হারাতে বসেছে।