কলকাতা: সন্দেশখালির ঘটনায় (Sandeshkhali Incident) বিরোধীদের উস্কানি রয়েছে বলে দাবি করল তৃণমূল। শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) শুক্রবার বলেন, কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম গ্রামের মানুষকে উস্কাচ্ছে। তৃণমূল সেখানে সংযত। পুলিশও সংযত। দুদিন পর দেখবেন, সন্দেশখালিতে কোনও সমস্যা থাকবে না। তিনি বলেন, কিছু মানুষের হয়ত কিছুক্ষণের জন্য কিছু ক্ষোভ ছিল। কোনও ব্যক্তির কোনও গলদ থাকতে পারে। কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে অন্য কারও সমস্যা থাকতে পারে। পরে আর সেই সমস্যা থাকবে না। নবান্নে মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা (B P Gopalika Chief Secretary) বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে সরকারের তরফে যা করার দরকার, তাই করা হচ্ছে।
এদিন তৃণমূল ভবনে সন্দেশখালি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল (Trinamool)। সেখানে কুণাল ছাড়াও হাজির ছিলেন দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বীরবাহা হাঁসদা। গত বুধবার সন্দেশখালিতে গোলমালের সূত্রপাত। বুধবার রাতে উত্তেজিত জনতা তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য শিবু হাজরার বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্ম এবং আলাঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আর এক জেলা পরিষদ সদস্য উত্তম সর্দারকে একটি ঘরে আটকে রেখে মারধর করা হয়। শেখ শাহজাহান ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ উত্তম এবং শিবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এই তিন তৃণমূল নেতা বছরের পর গরিব আদিবাসীদের জমি জোর করে দখল করেছেন। মাছ চাষের জমিতে নোনা জল ছেড়ে দিয়েছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর করা হয়েছে। শাহজাহানহীন সন্দেশখালিতে এখন ভয় ভাঙছে বলে স্থানীয়রা জানান। সেই কারণেই মহিলারা পর্যন্ত পথে নেমেছেন। শুক্রবারও জনতা শিবুর একাধিক ফার্ম জ্বালিয়ে দিয়েছে, তাঁর বাড়িতেও আগুন লাগানো হয়েছে। বহু জিনিস পুড়ে গিয়েছে। মহিলারা লাঠি, রড, বাঁশ, গাছের ডাল হাতে নিয়ে সন্দেশখালি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের একটাই দাবি, ওই তিন তৃণমূল নেতাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতও অভিযোগ করেন, সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি মানুষকে উস্কাচ্ছে। তারা বহিরাগতদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ফের অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি, পথে নামলেন মহিলারা
বিরোধীরা অবশ্য কুণালের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, সন্দেশখালিতে স্থানীয় মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। তৃণমূলের অত্যাচার আর তারা সহ্য করতে পারছে না। শাসকদল অযথা বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, সন্দেশখালিতে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলের রাজত্ব চলছিল। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ আজ রুখে দাঁড়িয়েছে। এটাই জনরোষ। তৃণমূলের প্রবীণ নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলাকে জনরোষ আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি এবার বুঝুন, জনরোষ কাকে বলে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সন্দেশখালিতে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীরা স্থানীয় মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছিল। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন শাহজাহান, উত্তম, শিবুরা। আজ মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।
অন্য খবর দেখুন