কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: এদেশে রসিক-নাগরের প্রতিযোগিতায় শ্রীকৃষ্ণ আজও রসের ভাণ্ডারের শীর্ষে রয়েছেন। ১৬ হাজারের বেশি স্ত্রী আর শতেক গোপিনী ছিল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় হন, কিংবা মদন মিত্র, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা শোভন চট্টোপাধ্যায় মায় শমীক ভট্টাচার্য পর্যন্ত কৃষ্ণের লেভেলেই আসেন না। এমনকী যে পার্থ নাম নিয়ে এত চর্চা, মহাভারতের আসল পার্থেরও কমন বউ দ্রৌপদী ছাড়া সুভদ্রা, চিত্রাঙ্গদা ও উলুপি নামে ৩ বউ ছিলেন। অর্থাৎ পাখির চোখ ছাড়াও আরও অনেক কিছু দেখতে পেতেন অর্জুন। ফলে দেখা যাচ্ছে, শক্তি-অর্থ ও ক্ষমতার কাছাকাছি এলেই বীরভোগ্যা বসুন্ধরা তত্ত্বের তন্ত্রধারকদের হরমোন জাগ্রত হয়ে ওঠে। আর রাজকন্যে হওয়ার বাসনায় মেয়েরাও লুটোপুটি খায় দণ্ডধারীদের ধারেকাছে। এই কারণেই বোধয় সাতের দশকে একটা কথা তরুণদের মুখে ঘুরত— কৃষ্ণ করলে লীলা, আমরা করলে বিলা!
বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘বাবু’ প্রবন্ধে লিখেছিলেন যে, এইসব বাবুদের একজন করে পত্নী, একজন করে উপপত্নী থাকবেন। তাঁরা পত্নীর অনুরোধে লক্ষ্মীপুজো ও উপপত্নীর অনুরোধে সরস্বতী পুজো করবেন। ফলে, দেখা যাচ্ছে কেচ্ছা-কেলেঙ্কারিতে বাঙালির ঐতিহ্য নেহাত নাবালক নয়। রাতে রঙিন চোখে, ফিটন চেপে বউবাজার বা দর্জিপাড়ায় যাওয়ার রেওয়াজই ছিল সেদিনের আভিজাত্যের প্রতীক। কোন বাবুর কটা পোষা মেয়েছেলে আছে, সেটার উপর নির্ভর করত কলকেতায় তাঁর কেতা কত?
আরও পড়ুন: ভর্তির দরকার নেই, আজই পার্থকে ছেড়ে দেবে ভুবনেশ্বর এইমস
সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা তো কলির সন্ধেয় ঘোরাফেরা করা মানুষজন। আর মদন মিত্রের নামই তো কাফি হ্যায়। তাঁর রতি-প্রেম তো স্বর্গবাসীদের মধ্যেও চর্চিত বিষয়। গাঢ় লাল, হলদে, সবুজ, নীল পোশাকের সঙ্গে বিচিত্রবর্ণের ও সাইজের রোদচশমা। কখনও পাগড়ি, কখনও টুপি, কখনও ফেজ পরে মেরা নাম জোকার হিসেবে তাঁর আবির্ভাবেই কচি কচি মেয়েদের হৃদয় হরণ করে নেন এই বয়সেও। সর্বক্ষণ সদ্যযৌবনা তরুণী-যুবতী পরিবৃত থাকতেই পছন্দ করেন তিনি। তবে হ্যাঁ রসভাণ্ডের পাত্র নিয়ে কখনও ছেনালি করেননি মদন। যা করেন সকলের চোখের সামনে, ঢাকঢোল পিটিয়ে। কারও পছন্দ-অপছন্দের তোয়াক্কা করেননি। যে কারণে মানুষ তাঁর কেরামতি দেখে মজা করেছে, আড়ালে কানাকানি করেনি।
এই পর্যায়ের আর এক যুগল হলেন শোভন-বৈশাখী। খুল্লামখুল্লা প্যায়ার…ইস দুনিয়া সে নেহি ডরেঙ্গে গোছের ভাব। তোমার প্রেমে হবো সবার কলঙ্কভাগী প্রেম। এমনকী এনিয়ে বাজারে ছবি ছাড়তে তাঁরা গর্ববোধ করেন। ঠাকুমারা বেঁচে থাকলে হয়তো বলতেন, বেহায়া মেয়েছেলে কোথাকার! লাজলজ্জা কিছু নেই গো!
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: রবিবারের নির্দেশের সংশোধন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ পার্থ
কিন্তু, ঋতব্রত, শমীক ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা হলেন আমবাঙালির চোখে ছুপা রুস্তম। সিঙ্কিং সিঙ্কিং ড্রিঙ্কিং ওয়াটার। প্রাপ্তবয়স্ক কোনও ব্যক্তি বা মহিলার একাধিক সম্পর্ক থাকতেই পারে। তা নিয়ে আদালতে যাওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই পরিবারের। কিন্তু, শিষ্টাচারের প্রশ্নে এই ডুবে ডুবে জল খাওয়া নিয়েই আজ প্রশ্ন তুলছে মানুষ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জীবন বহু বান্ধবীর অলঙ্কারে ভূষিত। সেসব মানুষ জানত, কিন্তু ঢোলা পাঞ্জাবির আড়ালে তা ঢেকে রেখে খেলার চেষ্টা করে গিয়েছেন চিরকাল। শমীক ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও আমরা শুনেছি, তাঁর নাকি আরও একটা সংসার রয়েছে। হতেই চাঁদ থাকলে কলঙ্কও থাকবে। এ আর এমনকী! জিভ থাকলে ভিডিয়ো কলে চাটাচাটির ইঙ্গিত তো আঁটকুড়েদেরই কাজ। বউকে নিশ্চই কেউ মাঝরাত্তিরে ভিডিয়ো কল করে বালিশ চুষে আদর দেখাবে না!
রাজনৈতিক জীবনে যৌন কেলেঙ্কারি ঘর ঘর কি কহানির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। যাকে একেবারে আর্টের স্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও ব্রিটেনের চার্লস ও ডায়ানা। হোয়াইট হাউসের ইনটার্ন হাঁটুর বয়সি মনিকা লিউইনস্কির সঙ্গে ফোনে যৌনতা করতেন ক্লিনটন। যৌনতা মেটাতে ব্যবহার করতেন কলম। এমনকী একবার তো বিমানেও…। তদন্তে আরও জানা যায়, হস্তমৈথুন করে তাঁর পোশাকেও বীর্যপাত করিয়ে দিয়েছিলেন মনিকা।
আরও পড়ুন: SSC High Court: শিক্ষা দফতরের ১৮ হাজার শূন্যপদ নিয়ে হলফনামা তলব হাইকোর্টের
বঙ্গবীরপুঙ্গবদের অত শারীরিক বল ও সাহস নেই। তাই বিড়ালের মতো পরের ঘরের দুধ সাবাড় করে পালিয়ে যাওয়াতেই তাঁদের আনন্দ। বিশ্ববাংলায় ক্লিনটন, ডায়ানা, কেনেডি তো দূরঅস্ত, নিদেনপক্ষে ইন্দিরা গান্ধীর মতো বিতর্কিত হতেও দম লাগবে। শশী থারুর তো এনাদের ভোঁ কাট্টা বলতেই পারেন।