কলকাতা: ‘সব ঠিক আছে৷ কোনও মন কষাকষি নেই৷ মিডিয়ায় যা লেখা হয়েছে তা একদম ভুল৷ আমরা এক টিমের মতোই কাজ করছি।’ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee and Prashant Kishor) সঙ্গে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সম্পর্কের ফাটলের খবর নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিল তৃণমূল (TMC I-PAC)৷ এক কথায়, ‘অল ইজ ওয়েল’৷
কিন্তু তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে বেশ কিছুদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক আগের মতো মসৃণ নেই৷ দু’জনের মধ্যে ভালোই দূরত্ব তৈরি হয়েছে৷ সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে লুইজিনহো ফেলেইরো, মুকুল সাংমা এবং পিকের সাক্ষাৎকারের পর ভোটকুশলীর উপর নাকি চটে যান মমতা৷ ওই সব সাক্ষাৎকারে গোয়ার রাজনীতিবিদ ফেলেইরো এবং মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা তৃণমূলে যোগদানের জন্য প্রশান্ত কিশোরকেই কৃতিত্ব দেন৷ গত ৩০ সেপ্টেম্বর একটি সাক্ষাৎকারে ফেলেইরো জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কোনওদিন দেখা করেননি৷ প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তৃণমূলে যোগ দেন৷ একই কথা শোনা যায় মুকুল সাংমার মুখেও৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ২৪-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে রাজ্যের বাইরে দলকে প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন মমতা-অভিষেক৷ সেখানে প্রকাশ্যে দুই নেতার মুখে পিকে স্তুতি তৃণমূলকে অস্বস্তি ফেলে৷ সবার এটাই ধারনা হয়, মমতার চেয়ে প্রশান্ত কিশোরের ক্ষমতা, রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি অনেক বেশি৷ নেতারা শুধু প্রশান্ত কিশোরের কথাতেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন৷ অথচ সুস্মিতা দেব, মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয়দের তৃণমূলে যোগদানের পিছনে অভিষেকের যে বিরাট কৃতিত্ব রয়েছে সেসব নিয়ে কিছুই বলা হচ্ছে না৷ তৃণমূল নেতারা মনে করছেন, মমতার ছায়ায় নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্খা পূরণ করছেন প্রশান্ত কিশোর৷
আরও পড়ুন: KMC Polls: পুরভোটে হিংসা, হাইকোর্টের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দাবি সিপিএম-বিজেপির
তার উপর প্রশান্ত কিশোর সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলে বসেন, কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি বিরোধী জোট সম্ভব নয়৷ এখনও দেশের বিরোধী ভোটের অনেকটাই কংগ্রেসের দখলে আছে৷ ভোট পরামর্শদাতার এই মন্তব্যকে ভালো চোখে নেননি মমতা৷ কেননা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোটের মুখ হয়ে উঠতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী৷ বিরোধ আরও বাড়ে কলকাতা পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে৷ প্রশান্ত কিশোর চেয়েছিলেন ৫০ শতাংশ বিদায়ী কাউন্সিলরকে তৃণমূল যেন টিকিট না দেয়৷ কিন্তু মমতা সেকথা শোনেননি৷ কয়েকজনের নাম বাদ রেখে অধিকাংশ পুরনো কাউন্সিলরদের পুরভোটে প্রার্থী করেন তিনি৷ এতে মমতা-পিকে’র সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া হয় বলে জল্পনা ছড়ায়৷ যদিও সব জল্পনায় জল ঢেলে এদিন তৃণমূল জানিয়ে দেয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আই-প্যাকের সঙ্গে এক টিমের মতোই কাজ করছে এবং আগামিদিনেও করবে তৃণমূল৷