কলকাতা: অজানা জ্বরের (Mystery Fever) প্রকোপ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)৷ জলপাইগুড়ি হয়ে উঠেছে অজানা জ্বরের এপিসেন্টার (Epicentre)৷ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা থেকে শিশু মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে৷ যদিও মৃত্যুর খবর অস্বীকার করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর৷ জানিয়েছে, অজানা জ্বরে কোনও শিশু মারা যায়নি৷
বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব এন এস নিগম (Health secretary N S Nigam) জানান, এই মরশুমে এমন জ্বর হয়৷ কিন্তু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েই শিশুরা মারা গিয়েছে এমনটা নয়৷ তবে যাদের মৃত্যু হয়েছে তার কারণ জানতে রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গের ভাইরাল ল্যাবে৷ পাশাপাশি কলকাতার ট্রপিক্যালে নমুনা পাঠানো হয়েছে৷
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে মৃত্যু ৫ শিশুর, অজানা জ্বর নিয়ে বাড়ছে আতঙ্ক
উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বাড়ছে অজানা জ্বরের প্রকোপ৷ অভিযোগ, গত চারদিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ জ্বর, বমি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ভর্তির সংখ্যা৷ বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্ক ভুগছেন বাবা-মায়েরা৷ কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর আজ জানিয়ে দেয়, অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কোনও শিশুর মৃত্যু হয়নি৷ এই সময় এমন জ্বর হয়৷ তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর এই সময় ভাইরাল জ্বর হয়েই থাকে৷ কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সেটা উদ্বেগের৷
প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা মনে করছেন ঋতু পরিবর্তনের কারণে এই জ্বর হয়ে থাকতে পারে৷ কিন্তু জ্বরের কারণ খুঁজতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে৷ তবে শিশু বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জ্বর নিয়ে আসা শিশুদের কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি৷ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত কোনও শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাস খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ এছাড়া জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের মাতৃমা বিভাগের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে৷ আলাদা করে করোনা ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে৷ সেখানে করা হয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা৷
আরও পড়ুন: বড়দের সর্দি, কাশি থেকেই ছোটদের অজানা জ্বর, মত চিকিৎসকদের
অপরদিকে জলপাইগুড়িতে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ৷ পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না চলে যায় সেজন্য বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর, পূর্ত দফতর ও জেলা প্রশাসন বৈঠকে বসে৷ বৈঠকের পর জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘শিশুদের চিকিৎসায় কোনও খামতি রাখা হবে না৷ দ্রুত সদর হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা প্রস্তুত৷ অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আধুনিক শয্যা ও যন্ত্রাংশ দিয়ে চালু হবে এই বিভাগ৷’ তবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে৷ জেলাশাসক জানান, এই মুহূর্তে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১০৫ জন শিশু৷ এদিন ৩২ জন শিশু ভর্তি হয়েছে আর ৩১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে৷ জোর দেওয়া হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়৷