কলকাতা: একের পর এক নতুন চমক কলকাতা পুলিশের অন্দরমহলে। বলাই বাহুল্য কলকাতা পুলিশের ঐতিহ্যকে নবরূপে সজ্জিত করতে তৎপর নগরপাল সৌমেন মিত্র। শুধু নতুন রূপেই না, তা আরও আকর্ষণীয় এবং ডিজিটালাইজড করে তুলছেন পুলিশ কমিশনার। কলকাতা পুলিশের প্রায় শুরুর সময় থেকে ব্যবহৃত গোয়েন্দা বিভাগের মালখানার ভোল পাল্টে নতুন রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। সেই মতই দায়িত্বভার গিয়ে পড়ে গোয়েন্দা বিভাগের ওপর। যার তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডিসি ডিডি স্পেশাল দেবস্মিতা দাস। চলতি সপ্তাহে তা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয় গোয়েন্দা বিভাগ। বৃহস্পতিবার পুলিশ কমিশনার নবরূপে সেন্ট্রাল ডিডি মালখানা উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের পরে ঘুরে দেখছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
প্রাক স্বাধীনতার সময় থেকে লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগের এই সেন্ট্রাল ডিডি মালখানা ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে গোয়েন্দা বিভাগের তদন্ত স্বার্থে বাজেয়াপ্ত করা জিনিসপত্র রাখা হয়। যত দিন কেটেছে ওই রত্নসম্ভারের ভার বেড়েছে। এক পুলিশ কর্মী জানান, সেন্ট্রাল ডিডি-র মালখানায় পাহাড় করা পুরানো কম্পিউটার, বড় বড় ট্রাংক সহ প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথি ও জিনিসপত্র আছে। যা নোংরা আবর্জনা স্তুপে পরিণত হয়েছিল লালবাজারের ঐতিহ্যবাহী সেন্ট্রাল ডিডি মালখানা। প্রয়োজনে সেখান থেকে কোন জিনিস বার করে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। বলাই বাহুল্য, তা সম্ভব ছিল না। সংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো। সূত্রের খবর, নগরপাল একদিন হঠাৎ-ই বলে উঠলেন মালখানাকে পরিষ্কার করতে হবে। সেখানে কাজ করার যোগ্য করে তুলতে হবে। সেই মতই কাজ শুরু হলো। তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডিসি ডিডি স্পেশাল দেবস্মিতা দাস।
আরও পড়ুন- ভ্যাকসিন প্রদানের সময়সীমা বাড়িয়ে এক লাখ টিকা প্রাপককে এসএমএস-কল করবে পুরসভা
মালখানাকে একদম ডিজিটালাইজড করে তোলা হল। পুরানো জিনিসপত্র বদলে বড় বড় কালো বক্সে করে গুরুত্বপূর্ণ বাজেয়াপ্ত জিনিস রাখা হয়। যার ওপরে কিউআর কোড দেওয়া হল। ওই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই ভিডিওর মাধ্যমে জানা যাবে ওই বক্সের ভেতরে কি জিনিস আছে। যদি কখনো কোর্টের প্রয়োজন পড়ে তাহলে ভিডিও কলের মাধ্যমে কোর্টকেও তা দেখানো যাবে। পুলিশকর্মীদের ওই বাক্স আর কোর্টে নিয়ে যেতে হবে না। সব তথ্যই থাকবে সফটওয়্যারে। কম্পিউটারে এক ক্লিকেই মিলবে সব তথ্য।
আরও পড়ুন- আল-কায়েদার জিহাদ ঘোষণায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ, ষড়যন্ত্রকারী পাকিস্তান!
একটা ফ্রেমে লেখা হলো এই মালখানার ইতিহাস, যা মালখানায় ঢোকার সময় চোখে পড়বে সকলের। ঢোকার মুখে ছোট ফ্রেমে মাল খানার ইতিহাসও লেখা হয়েছে। একদম নয়া সাজে সংরক্ষণ করা হলো লালবাজারের এক অন্যতম ঐতিহ্যকে। যা বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরপাল উদ্বোধন করেন।
কয়েকদিন আগেই কলকাতা পুলিশের সব থানার অসিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, থানার মালখানা গুলোকে দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। এমনকি তার জন্য উপহার ধার্য করেছিলেন। কথামতো ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড প্রাইসও দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- বিদেশ থেকে ভারতে আসতে rt-pcr রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ বাধ্যতামূলক
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সৌমেন মিত্র কে আনা হয় দ্বিতীয় বার পুলিশ কমিশনার পদে। এখনো সাত মাসও সম্পূর্ণ হয়নি তাঁর। এর মধ্যেই আইন-শৃঙ্খলা সহ কলকাতা পুলিশের পরিকাঠামো কে আরও উন্নত এবং নতুন ভাবে গড়ে তুলতে তৎপর তিনি। লালবাজারের এক পুলিশ কর্তা বলেন, শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের অন্দরমহল এই নয়, শহরের ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলোকে কিভাবে সংরক্ষণ করা যাবে তা নিয়েও বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে তাঁর।