কলকাতা: শহরের যেকোনও প্রান্তে এবার নতুন নির্মাণ শুরু মানেই বাধ্যতামূলক ভাবে টাঙাতে হবে ‘তথ্যবোর্ড’। তাও আবার আধুনিক কায়দায়— কিউআর কোড-সহ। এই নয়া নিয়ম জারি করেছে কলকাতা পুরনিগম (Kolkata Corporation)। নির্দেশিকায় স্পষ্ট, যদি নির্মাণস্থলের একাধিক গেট থাকে, তবে প্রতিটি প্রবেশপথের সামনে এই বোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক। নিয়ম অমান্য করলেই নির্মাণে পড়বে তালা! সোজাসুজি ঝুলবে কাজ বন্ধের নোটিশ।
বহুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছে, বড় নির্মাণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত নকশা গোপন রেখে ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করেন নির্মাতা সংস্থাগুলি। ফ্ল্যাট কেনার পরই ধীরে ধীরে সামনে আসে আইনি ফাঁকফোকর। এই পরিস্থিতি বদলাতেই এবার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পুরনিগম। নির্দিষ্ট মাপের টিনের বোর্ডে লেখা থাকবে নির্মাণস্থলের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য। সেই সঙ্গে থাকবে স্ক্যানযোগ্য কিউআর কোড, যার মাধ্যমে মুহূর্তে মোবাইলে খুলে যাবে অনুমোদিত নকশা ও অন্যান্য তথ্যের তালিকা।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বোলপুর যাবেন সৌরভ
পুরনিগমের নিয়ম বলছে, নির্মাণস্থলের বাইরে যে বোর্ড টাঙানো হবে তার মাপ হতে হবে ৬ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪ ফুট প্রস্থের। আর বোর্ডে থাকা কিউআর কোডের মাপ নির্ধারিত ১ ফুট বাই ১ ফুট। সেখানে ক্লিক করলেই জানা যাবে বিল্ডিংয়ের অনুমোদন সংক্রান্ত সমস্ত খুঁটিনাটি — জমির আয়তন, ফ্লোরের সংখ্যা, পার্কিংয়ের জায়গা, ওয়ার্ড নম্বর থেকে আবেদনকারীর নাম, ইঞ্জিনিয়ার ও এলবিএস-এর পরিচয়ও। বোর্ডটি এমনভাবে বসাতে হবে, যাতে সহজেই সকলের চোখে পড়ে। বড় প্রকল্পে একাধিক প্রবেশপথ থাকলে, প্রতিটি গেটের সামনেই এই বোর্ড রাখা বাধ্যতামূলক।
নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, নির্মাণস্থলের নম্বর, পশ্চিমবঙ্গ রেরা রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্ল্যান অনুমোদন নম্বর, জমির পরিমাপ, অনুমোদিত ফ্লোরের সংখ্যা— এসব তথ্য বোর্ডে লিখতে হবে। কিউআর কোড স্ক্যান করলেই মিলবে আরও বিস্তারিত তথ্য। যদি এই তথ্য না থাকে বা গোপন রাখা হয়, তবে সেটা সরাসরি আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে। আর পুর কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে ৪০১ ধারায় কাজ বন্ধের নির্দেশ জারি করবে।
পুরনিগমের এক আধিকারিকের কথায়, “অনেক সময়ে ফ্ল্যাট কেনার আগেই বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে দেন ক্রেতারা। পরে সামনে আসে নানারকম সমস্যা। এমনকি ফ্ল্যাটে উঠেও জটিলতার মুখে পড়তে হয়। একইভাবে আশেপাশের মানুষও বেআইনি নির্মাণের কারণে সমস্যায় পড়েন। এবার সেই অসুবিধা অনেকটাই কাটবে। কিউআর কোড স্ক্যান করলেই সব তথ্য হাতে এসে যাবে। এতে যেমন স্বচ্ছতা বাড়বে, তেমনই প্রতারণার পথও অনেকটাই বন্ধ হবে।”
দেখুন আরও খবর: